ভোটগ্রহণের শুরুতে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভোটারের লাইন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন ভোটাররা।
মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ মোট ১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ভোট বর্জনকারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে জামায়াত সমর্থিত দুজনসহ মোট ৯ জন রয়েছেন। এছাড়া তিনজন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা তাকে ভোট দিতে দেয়নি’ এ অভিযোগ করে তিনি ভোট বর্জন করেন।
মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভায় অনিয়মের অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা, বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম নির্বাচন বর্জন করেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুমেল আহমদের নেতৃত্বে ভোটকেন্দ্র দখল করায় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুজন আহত হন।
এছাড়া ঝাউদিয়া ভোটকেন্দ্র এলাকায় স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) মেয়র প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
দেশের সবচেয়ে আলোচিত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা। এর আগে নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়া ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভা নির্বাচনে গনিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা আরিফুল নামের এক আনসার সদস্য আহত হন।
এদিকে পৌরসভাগুলোর মধ্যে ২৯টিতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ৩১টিতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়।
প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন অনেক ভোটার। কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানে ভোটারদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। প্রতিটি ভোটের জন্য গড়ে ৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিট সময় ব্যয় হয়। মাঠ পর্যায়ে ইভিএম নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা না থাকায় ভোটগ্রহণে দায়িত্বরতদের অনেকটা ত্যক্ত-বিরক্তও হতে হয় এ সময়।
দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্নের জন্য কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন ছিল। তাদের সহায়তার জন্য ছিলেন আনসার সদস্যরা।
দ্বিতীয় ধাপে ৬১টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করলেও নীলফামারীর সৈয়দপুরের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারিকেল গাছ প্রতীক) মো. আমজাদ হোসেন সরকারের মৃত্যুতে ওই পৌরসভার ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
দেশের ৩২৯টি পৌরসভার মধ্যে প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয় ২৮ ডিসেম্বর। তৃতীয় ধাপে ৬৪টি পৌরসভায় ৩০ জানুয়ারি এবং চতুর্থ ধাপে ৫৬টি পৌরসভায় ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।