এর ফলে যেকোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের পাশাপাশি অপরাধীদের শনাক্তের পথ সহজ হয়েছে।
তবে সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় গ্রেফতার অপরাধীদের তথ্য সিআইএমএস-এ না পাওয়ায় আবারো তথ্য হালনাদের বিষয়টি সামনে আসে। নগরবাসীর তথ্য প্রতিনিয়ত হালনাগাদের ধারাবাহিকতায় আবারো সবার তথ্য সংগ্রহ করবে পুলিশ।
এ লক্ষ্যে দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানীজুড়ে পালিত হবে ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ-২০২১’।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে চলবে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
ডিএমপি জানায়, অপরাধ প্রতিরোধ, প্রতিকার ও জননিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে ডিএমপি এলাকায় বাড়ি/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠানের মালিক, ভাড়াটিয়াসহ রাজধানীতে বসবাসরত নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষণ এবং বৈজ্ঞানিক ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে প্রণীত সিআইএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে চলমান রয়েছে। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ৩০৬টি বিটে বিভক্ত করে ডিএমপির সকল থানার বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের তথ্যাদি সফটওয়্যারে এন্ট্রির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
২০১৫ সাল থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় শুরু হয় বিট পুলিশিং প্রথা। অপরাধ ব্যবস্থাপনার জন্য নানাবিধ তথ্য সংগ্রহের অংশ হিসেবে মহানগরে বসবাসরত নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় নাগরিক তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম। তথ্যের বহুবিধ ব্যবহার নিশ্চিতে প্রস্তুত করা হয় সিআইএমএস, যার যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) ডিএমপি সদর দপ্তরে ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ পক্ষ-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সারাদেশে বিট পুলিশিংয়ের একটা পরিবর্তন এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর প্রতিটি থানার বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ পক্ষ’ শুরু করতে যাচ্ছে ডিএমপি।
নাগরিকদের তথ্য হালনাগাদের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনাকালে ঢাকা মহানগরীর অনেক ভাড়াটিয়া পরিবারসহ ঢাকা শহর ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেছেন। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের পরিবর্তে ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহের এবারের কার্যক্রম:
এবারের ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ পক্ষ’ উপলক্ষে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি বিটে নতুন ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ করা। যে সকল ভাড়াটিয়ার তথ্য পূর্বে সংগ্রহ করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তী সময়ে যারা বাসা বদল করেছেন তাদের তথ্য হালনাগাদ করা।
বিভিন্ন অপরাধী ও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা বাড়ির মালিককে ভুয়া নাম ঠিকানা দিয়ে বাসা ভাড়া নিচ্ছে কি-না এ ব্যপারে বাড়ির মালিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। বিট এলাকার অপরাধীদের তালিকা প্রস্তুত করা যেমন- পেশাদার কিলার, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, চোর, ছিনতাইকারী, মাদক সংক্রান্ত অপরাধী, নারী উত্যক্তকারী, জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তি ইত্যাদি। বাড়িওয়ালাদেরকে সন্দেহভাজন লোক, অস্থায়ী কর্মচারি ও সিকিউরিটি গার্ডদের সর্ম্পকে বিট অফিসারকে তথ্য প্রদানে উৎসাহিত করা।
যেভাবে সিআইএমএস মোবাইল অ্যাপসে তথ্য নিবন্ধন করা যাবে:
ডিএমপির নাগরিকরা চাইলে নিজেই মোবাইলে সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে নিজের তথ্য হালনাগাদ করতে পারবেন।
এজন্য প্রথমে গুগল প্লে-স্টোরে গিয়ে (CIMS DMP) লিখে সার্চ দিয়ে অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে হবে। তারপর লগইন অপশনে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর একটি ভেরিফিকেশন কোড উল্লেখিত মোবাইল ফোনে পাঠানো হবে। ভেরিফিকেশন কোড এ্যাকটিভ করে পাসওয়ার্ড সেট করে লগইন করলে বিভিন্ন ক্যাটাগরি দেখা যাবে।
এখান থেকে নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত অপশনটিতে ক্লিক করলে একটি ফরম পাওয়া যাবে। ফরমে প্রদত্ত ঘরে সকল তথ্য নির্ভূলভাবে পূরণ করে সাবমিট করলেই তথ্য হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন হবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
নাগরিকদের পূরণকৃত তথ্য সেন্ট্রাল ডাটাবেজে যুক্ত হওয়ার আগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদত্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে সঠিক থাকলে অ্যাপ্রুভাল দিলে সিআইএমএস-এর মূল ডাটাবেজে তথ্য যুক্ত হবে।
আর যদি কোনো কারণে ফরম পূরণ অসম্পূর্ণ হয় বা তথ্যে ভুল থাকে সেক্ষেত্রে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে জানানো হবে।