যার কাছে যত বেশি তথ্য আছে, সে তত বেশি ধনী; তত বেশি প্রভাব বিস্তারকারী। এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে বিশ্বের কোন দেশে ডাটা সেন্টার কতগুলো?
তথ্য বা ডাটা আগামী দিনের পারমাণবিক বোমার মতো। আজকের সর্বাধিক পারমাণবিক বোমা শক্তিধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলে ডাটা সেন্টার থেকেই বা তারা কেন পিছিয়ে থাকবে? হ্যাঁ, বিশ্বে সর্বাধিক সংখ্যক ডাটা সেন্টার আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই। শুধু ব্যক্তি মালিকানায় থাকা হিসাবেই দুই হাজার ৬০০ এর বেশি ডাটা সেন্টার রয়েছে দেশটিতে।
তথ্য কেনা-বেচার অনলাইন মার্কেটপ্লেস ক্লাউডসিন প্ল্যাটফর্মের বরাতে জার্মানি ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টা সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডাটা সেন্টারের সংখ্যা প্রকাশ করে। তবে এই তালিকায় কোনো সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকা ডাটা সেন্টারকে হিসাবে রাখা হয়নি। শুধু ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত ডাটা সেন্টারগুলোকেই তালিকায় রাখা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ক্লাউডসিন প্ল্যাটফর্মের মতে, বিগত ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজার ৬৫৩টি ডাটা সেন্টার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ডাটা সেন্টারের সংখ্যা এতটাই বেশি যে, তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাজ্যও ঢের পিছিয়ে। যুক্তরাজ্যে ডাটা সেন্টারের সংখ্যা ৪৫১টি। অর্থাৎ যুক্তরাজ্যের তুলনায় পাঁচ গুণেরও বেশিসংখ্যক ডাটা সেন্টার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়াও অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করলে, একা যুক্তরাষ্ট্রেই বিশ্বের ৩৩ শতাংশ ডাটা সেন্টারের অবস্থান।
৪৪২টি ডাটা সেন্টার নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জার্মানি। তালিকার পরের স্থানগুলোতে— কানাডা চতুর্থ, দেশটিতে রয়েছে ২৭৯টি ডাটা সেন্টার; ২৭৪টি ডাটা সেন্টার নিয়ে নেদারল্যান্ডস পঞ্চম; ষষ্ঠ অবস্থানে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে ২৭২টি, ফ্রান্সে ২৪৮, জাপানে ১৯৯টি, রাশিয়ায় ১৪৫টি এবং দশম অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল, দেশটিতে ১২৮টি ডাটা সেন্টার।
তালিকায় দ্বাদশ অবস্থানে রয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। দেশটিতে ১২৩টি ডাটা সেন্টার রয়েছে।
তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৭৩তম। বাংলাদেশে ছয়টি ডাটা সেন্টার রয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটিই ঢাকায় অবস্থিত। অপরটি বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক তিনটি ডাটা সেন্টার রয়েছে ঢাকা কোলো নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায়। আর একটি করে ডাটা সেন্টার রয়েছে কোলো সিটি, ডেভো টেক এবং জিওন বিডির। এগুলোর মধ্যে ডেভো টেক ক্লাউড সার্ভিস সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবেও কাজ করে।
তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা গণমাধ্যমকে বলেন, এই সময়ে ডাটা সেন্টারের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা এখন যা করি, যা দেখি বা যা শুনি—এর সবই ডাটা। আর এসব ডাটা বিগ ডাটা এনালাইসিসের মাধ্যমে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে পরিণত হয়। বাংলাদেশকে এই খাতে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একই সাথে বাংলাদেশ ও দেশের নাগরিকদের তথ্য যেন সুরক্ষিত থাকে সেই বিষয়টি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। আর একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে নিজ তথ্য সুরক্ষায় সচেতন হতে হবে। আমরা ইন্টারনেটে কোথায় বিচরণ করছি এবং কোথায় কী ধরনের তথ্য দিচ্ছি সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।