বিএসইসি’র এক নির্বাহি পরিচালক অর্থসংবাদকে জানায়, এ বিষয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। একটি অসাধু চক্র গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কমিশন এমন কোন সিদ্ধান্ত নেবে না, যেটাতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিএটিবিসি বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পর থেকে কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস নিয়ে ভুল তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে একদল বাজার কারসাজি চক্র। বোনাস লভ্যাংশের পরে কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস আরো কমে যাবে বলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তারা।
এদিকে বিএটিবিসি শেয়ারপ্রতি ৬০ টাকা নগদের পাশাপাশি একটি শেয়ারের বিপরীতে দুটি করে বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা আছে ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের আইন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যদি কোনো কোম্পানি যে পরিমাণে রাইট শেয়ার বা বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে তাহলে কোম্পানিটির শেয়ার দর সে অনুযায়ী এডজাস্টমেন্ট করা হয়। তবে এডজাস্টমেন্ট এর ক্ষেত্রে যদি কোন কোম্পানির শেয়ার দর নির্ধারিত ফ্লোর প্রাইজের নিচে চলে যায় সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ফ্লোর প্রাইস পর্যন্ত এডজাস্টমেন্ট হবে। কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসের নিচে যেতে পারবেনা বলে আইনে বলা হয়েছে।
বিএটিবিসি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা আছে ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা। যদি এর নিচে এই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি হতে না পারে, তাহলে শেয়ারধারীরা বিপুল মুনাফা পাবেন। কারণ, এখন বর্তমান বাজার মূল্যের শেয়ারধারীরা তখন তিনটি শেয়ারে পাবেন দুই হাজার ৭২২ টাকা ৬০ পয়সা। কোম্পানিটির রেকর্ড ডেট ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ৩ মার্চ। সেদিন যাদের হাতে শেয়ার থাকবে, তারাই বোনাস ও নগদ লভ্যাংশ পাবেন।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে চারটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার বোনাস ঘোষণা করে।
তারপর ১৯৮৭ সালে দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি, ১৯৯৩ সালে তিনটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার ঘোষণা করা হয়। এর ২৫ বছর পর ২০১৮ সালেও কোম্পানিটি ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর আগ পর্যন্ত কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৬০ কোটি টাকা। লভ্যাংশ ঘোষণার পর মূলধন দাঁড়ায় ১৮০ কোটি টাকা। আবার ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ অনুমোদন হলে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি টাকা।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। সরকারের কাছে আছে দশমিক ৬৪ শতাংশ শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকরীদের কাছে আছে ১২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
বিদেশিদের কাছে ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার।
উল্লেখ্য, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর শেয়ারবাজারে ধস ঠেকাতে সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ঘোষণা করা হয় ফ্লোর প্রাইস। তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির ক্ষেত্রেই এই দাম বেঁধে দেয়া আছে। বলা হয়েছে, এর নিচে কোনো অবস্থাতেই শেয়ারের দাম যাবে না। ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো কোম্পানির মৌল ভিত্তি বিবেচনায় না নিয়ে বাজার মূল্যকেই বিবেচনা করা হয়। গত ২২ মার্চের আগের পাঁচ দিনের গড় মূল্য ফ্লোর প্রাইস হিসেবে ধরা হয়।