স্থানীয় কৃষি বিভাগের আশা, কুড়িগ্রামের চরভূমিতে সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ করলে চরের কৃষকের ভাগ্য বদলে যাবে। সেই সঙ্গে অনুন্নত এই জেলার অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার চিত্র উঠে এসেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদী আর পাঁচ শতাধিক চর রয়েছে। এই চরের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন চাষিরা। বাড়ছে আবাদ। এতে করে একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে পতিত অনাবাদী জমিকে কাজে লাগিয়ে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।
গত বছর জেলায় ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হলেও এবার ২০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে দুই মেট্রিকটন সূর্যমুখী তেলবীজ উৎপাদন হয়। বর্তমানে প্রতি কেজি বীজের দাম ৮০ টাকা। সে হিসেবে এবার জেলায় কমপক্ষে ৩২ কোটি টাকার সূর্যমুখীর তেলবীজ বিক্রি হবে। দাম বাড়লে এই অঙ্ক আরো বাড়বে।
কৃষকেরা জানান, প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদন খরচ পড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকার তেলবীজ।
সূর্যমুখী চাষি লাল মিয়া জানান, চরের জমিতে সূর্যমুখীর ভালো ফলন দেখে তাঁরাও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। ব্যাংক আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এলে সূর্যমুখীর চাষ আরো বাড়বে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, সদর উপজেলার ২০ একর জমিতে এ বছর সূর্যমুখীর চাষ করেছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক জানান, জেলার ৪৬ হাজার চরভূমির বেশির ভাগে সূর্যমুখী চাষের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। জেলার দারিদ্র্য বিমোচনে সূর্যমুখী চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ জানান, রংপুর অঞ্চলে এবার এক হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় চার গুণ বেশি।