সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের উন্নয়নে স্বাধীন পর্যালোচনাবিষয়ক অনলাইন আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ ছাড়া কর্মসংস্থানেও বিশেষ নজর থাকা উচিত বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সিপিডির পরামর্শ হলো গ্রামীণ অবকাঠামো ও আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়ানো। এতে গ্রামাঞ্চল ও উপশহরে কাজের সুযোগ তৈরি হবে। মানুষের ভোগব্যয় বৃদ্ধি অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে।
করোনা মোকাবিলায় সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল, তা মূলত ব্যাংকনির্ভর। অথচ অন্যান্য দেশে সরাসরি নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকনির্ভর প্রণোদনার কারণে ব্যাংকব্যবস্থার ওপর যেমন চাপ বেড়েছে, আর ব্যাংকের সঙ্গে যেসব ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তাদের যোগাযোগ বা সম্পর্ক নেই, তারা প্রণোদনা সুবিধার বাইরে থেকে গেছে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এমনিতেই নাজুক। গত কয়েক বছরে খেলাপি ঋণের বোঝা তৈরি হয়েছে। করোনার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে শিথিলতার যে সুযোগ দিয়েছে, তাতে কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কমেছে, কিন্তু বাস্তবে ব্যাংকব্যবস্থার ওপর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। চলতি ঋণ পরিশোধে এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে বিলম্ব করার সুযোগ দেওয়া হলে সমস্যা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সামষ্টিক অর্থনীতির হালচাল তুলে ধরেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এরপর ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এডিপির মাত্র ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। যে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে এত কথা হলো, সেই স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়েছে সবচেয়ে কম, ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এমনকি আগের অর্থবছরেও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় এর চেয়ে বেশি ছিল।
প্রবন্ধে আরও বলা হয়, রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য যে ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি সবচেয়ে বেশি বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) জন্য যে ২০ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, তা সবচেয়ে কম বিতরণ হয়েছে। অথচ মহামারিতে এ খাতই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। আর ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এ ঋণ তহবিলের মাত্র ৫৮ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে।