নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মানিকগঞ্জের আরিচা প্রান্তে আরিচা-কাজিরহাট ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আরিচা-কাজিরহাট ফেরি রুটের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। আরিচা থেকে কাজিরহাট যেতে সময় লাগবে এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট; কাজিরহাট থেকে আরিচা আসতে সময় লাগবে এক ঘণ্টা ১০ মিনিট। একটি রো রো (বড়) ও দুটি মাঝারি আকৃতির ফেরি দিয়ে এ রুটের সার্ভিস শুরু হয়েছে। এ রুটে বড় বাসের ভাড়া ২ হাজার ৬০ টাকা, ট্রাকের ভাড়া এক হাজার ৪০০, মাইক্রোবাসের ভাড়া ১ হাজার, প্রাইভেটকারের ভাড়া ৬৮০, মোটরসাইকেলের ভাড়া ১০০ এবং যাত্রীর ভাড়া ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতকারী জনসাধারণের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে উপহার স্বরুপ আরিচা-কাজিরহাট ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করা হয়।
বর্তমানে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের একটি অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হবে। পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামালসহ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সাজোয়া যান, অন্যান্য ভারী যানবাহন এই ঘাট দিয়ে পারাপার হতে পারবে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।
১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা এবং পদ্মা নদী দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিমে দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। সেই সময় ঐতিহাসিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি ফেরিঘাট আরিচা-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-নগরবাড়ী যথাক্রমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন পারাপারে আরিচা নদী বন্দরের আওতায় পরিচালিত হতো। ফেরি পারাপারের অন্যতম প্রধান ঘাট হিসেবে তখন থেকেই নগরবাড়ী উত্তরাঞ্চলে পরিবহন সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল। পরবর্তী সময়ে নৌ-পথের দূরত্ব কমানোসহ উন্নত যাত্রী সেবা নিশ্চিতে ২০০২ সালে ফেরিঘাট আরিচা থেকে পাটুরিয়াতে স্থানান্তর করা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ায় নগরবাড়ী রুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায় এবং ফেরিঘাট আট কিলোমিটার ভাটিতে কাজিরহাটে স্থানান্তর করা হয়। তবে ঘাট স্থানান্তর করা হলেও ব্যবহারকারীদের কাছে এর গুরুত্ব কোনো অংশেই কমে যায়নি। আরিচা থেকে কাজিরহাটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল অব্যাহত রয়েছে এবং এর হার আনুপাতিক হারে বাড়ছে।
এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, বৃহত্তর পাবনাসহ আশপাশের জেলার জনসাধারণের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতু ব্যবহারের চেয়ে আরিচা-কাজিরহাট ফেরি রুট ব্যবহার করা অর্থ এবং সময় উভয় ক্ষেত্রেই সাশ্রয়ী। সমীক্ষায় আরও দেখা যায় যে, গত বছর এ ঘাট ব্যবহার করে প্রায় ২৮ লাখ যাত্রী পারাপার হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।