বুধবার (৪ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ পাচারের বিষয়ে জিএফআই যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সে সম্পর্কে সরকার কিছু জানে না। তবে অর্থ পাচারের প্রমাণ পেলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, জিএফআই'র অর্থ পাচার সংক্রান্ত তথ্য আমার কাছে নেই। তাদের (জিএফআই) কাজই হলো এই সমস্ত তথ্য বের করা, তথ্য বিশ্লেষণ করা। তাদের যদি কোন বক্তব্য থাকে তাহলে তো আমাকে জানাবে। পত্রিকায় এই সমস্ত তথ্য দিয়ে কী লাভ?
জিএফআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাত বছরে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ২৭০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রায় যা সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা। যা দেশের চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান। প্রতি বছর গড়ে পাচার হয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, জিএফআই আমাকে দেখতে পারে না? সরকারকে দেখতে পারে না? আইডিয়া থেকে অনেক কিছু বলা যায়। তারা আইডিয়ার ওপরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।
অর্থ পাচার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না, তাই না জেনে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে বিষয়টা আমরা দেখব ও বিশ্লেষণ করব। পরে আপনাদের জানাব। বর্তমানে আমার নলেজে নেই। এ তথ্য আমার কাছে নেই।
সারা বিশ্বে এ তথ্য প্রকাশ করেছে জিএফআই, এ কথার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা এ তথ্য কোথায় পেয়েছে? আমি বলে দিলাম, বছরে আমেরিকা থেকে ৩০ হাজার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়। তাহলেই হয়ে গেল?
সরকারের করণীয় কী, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার তো এ বিষয়ে জানেই না। সরকারকে তো আগে জানতে হবে। বাংলাদেশে তথ্য আসেনি। তথ্য আসলে তো আমি জানতাম। আমি সরকারের একটা অংশ। সরকারের কাছে তথ্য এলে আমি পেতাম। যদি এখান থেকে টাকা চলে যায় তাহলে তো অর্থ মন্ত্রণালয়ের টাকাই যাবে।
টাকা পাচার রোধে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে মামলা ছাড়া কী করতে পারি। কারো কিছু অপরাধ পেলে আমরা মামলা করি। মামলা করলে দুদক থেকে শুরু করে সরকারের অন্যান্য তদন্ত সংস্থা ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কাউকে জেলে পাঠায়, কেউ আবার মুক্তি পায়।
ব্যবসায়ীরা টাকা পাচার করে বিদেশে বাড়ি করছে, এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারা অর্থমন্ত্রী হলে কী করতেন? আমরাও পদক্ষেপ নিচ্ছি। অনেক মামলা করি, অনেকে জেলে আছে। তবে সবশেষে বিষয়টা আদালত দেখেন।