আমাদের দেশের গড় আয়ু প্রায় ৬০ বছর, তবে কেউ আবার ৮০-৯০ বছরও পার করে দেন-এপারেই। যদিও বেশিরভাগই ততদিনে বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি ভুলে যাওয়ার ব্যধিতে ভুগতে থাকেন। নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, বৃদ্ধ বয়সেও এক বা একাধিক সমবয়সী মানুষের সঙ্গে শক্তিশালী এবং গভীর সামাজিক সম্পর্ক বজায় থাকলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় থাকে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের মতো।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমিলি রোগালস্কি বলেন, ‘বয়স বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মস্তিষ্কের অবক্ষয়ের হার কমানোর পেছনে জোরদার সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখার অবদান রয়েছে। গবেষণাটি এই ধারণাকে সমর্থন করে।’ ওই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আমান্ডা কুক বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধরে রাখার পেছনে দায়ি বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে এই গবেষণা।’
আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, বৃদ্ধ বয়সে মানসিক সুস্বাস্থ্য স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়। রোগালস্কি আরও বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে ভালো বন্ধুত্ব বজায় থাকলেই যে স্মৃতিভ্রংশ হবে না, ব্যাপারটা এত সোজাও নয়। তবে বুড়ো বয়সে মস্তিষ্কের ক্ষমতা ধরে রাখতে করণীয়গুলোর তালিকা করা হলে ধুমপান ত্যাগ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদির তুলনায় একাধিক গভীর বন্ধুত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
‘প্লস ওয়ান’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা সংক্রান্ত এক নিবন্ধে অংশগ্রহণকারীরা ৪২টি বিষয়ের ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘রিফ সাইকোলজিক্যাল ওয়েল বিয়িং স্কেল’ যা মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে মানসিক স্বাস্থ্য পরিমাপ করে ছয়টি ধাঁচে।
সেগুলি হল: ব্যক্তিস্বাধীনতা, অন্যদের সঙ্গে সুসম্পর্ক, পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান, ব্যক্তিগত উন্নয়ন, জীবনের লক্ষ্য ও আত্মসমর্থন।
রোগালস্কি বলেন, ‘অন্যদের সঙ্গে সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে বৃদ্ধদের গড় ফলাফল হয় ৪০ (চল্লিশ), আর ‘কন্ট্রোল গ্রুপ’-এর ফলাফল ছিল ৩৬।