বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানায় এসি সার্ভিস এক্সপার্টদের নিয়ে অনুষ্ঠিত দেশের সর্ববৃহৎ সম্মেলনে নতুন মডেলের ওই এসি উন্মোচন করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম। সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন সারা দেশের সহস্রাধিক এসি সার্ভিস এক্সপার্ট। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার ও হুমায়ূন কবীর, ওয়ালটন এসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর রহমান, চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ওয়াল্টার কিম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, উদয় হাকিম, ইউসুফ আলী, কর্নেল (অব.) শাহাদাত আলম, আমিন খান, মফিজুর রহমান, চিফ সার্ভিস অফিসার মুজাহিদুল ইসলাম, এসির চিফ অপারেটিং অফিসার সন্দীপ বিশ্বাস, গবেষণা ও উন্নয়ণ বিভাগের প্রধান আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, অফলাইন ভয়েস কমান্ড এসি ইনস্টলেশনের পর পাওয়ার সংযোগ থাকা অবস্থায় ভয়েস কমান্ড দিয়ে পরিচালনা করা যাবে। বিদ্যুৎ সংযোগ থাকা অবস্থায় এসিটি স্ট্যান্ডবাই মোডে থাকবে। এ সময় ‘হ্যালো ওয়ালটন’ বললে এসিটির ‘একটিভ মোড’ অন হবে। এরপর ‘এসি স্টার্ট’ বললে এটি চালু হবে। এ সময় ব্যবহারকারী কথা বলে নির্দেশনা দিয়ে এসিটি পরিচালনা করতে পারবেন। নির্দিষ্ট তাপমাত্রা সেট করতে ‘কুল মোড’ কমান্ড দিয়ে কাঙ্খিত তাপমাত্রা বলতে হবে। যেমন ‘টুয়েন্টি ডিগ্রি’ বললে এসিটি তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রিতে সেট হবে।। এসি বন্ধ করতে ‘এসি অফ’ বলতে হবে।
উল্লেখ্য, ১০ সেকেন্ড কোনো কমান্ড না দিলে এসিটি ‘স্ট্যান্ডবাই মোড’-এ চলে যাবে। এক্ষেত্রে পুনরায় ‘হ্যালো ওয়ালটন’ বলে ‘একটিভ মোড’ অন করতে হবে। একটি কমান্ড দেয়ার ৩ সেকেন্ড পর আরেকটি কমান্ড দেয়া যাবে।
এর ইউভি (আল্ট্রা ভায়োলেট) কেয়ার প্রযুক্তি ঘরের বাতাসে ছড়িয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করবে। ফ্রস্ট ক্লিন প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসির অভ্যন্তরে জমা বরফ গলিয়ে বাইরে বের করে দেবে। ফলে এই এসি ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ হবে নির্ঝঞ্জাট।
ওয়ালটন এসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তানভীর রহমান বলেন, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানায় এসি উৎপাদন শুরু করেন তারা। ওয়ালটনের রয়েছে দেশ-বিদেশের প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত শক্তিশালী আরএন্ডডি (গবেষণা ও উন্নয়ণ) বিভাগ। যাদের নিয়মিত গবেষণায় একের পর এক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রেতাদের জন্য ভয়েস কমান্ড এসি এনেছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের রয়েছে ১২ সিরিজের ৯৬ মডেলের এসি। এক, দেড় এবং দুই টনের স্প্লিট এসির পাশাপাশি স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, হোটেলের মতো মাঝারি স্থাপনার জন্য ৪ ও ৫ টনের ক্যাসেট ও সিলিং টাইপ এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন। বড় স্থাপনার জন্য ওয়ালটনের রয়েছে ভেরিয়্যাবল রেফ্রিজারেন্ট ফ্লো বা ভিআরএফ এবং চিলার।
সম্প্রতি ইনভার্না সিরিজের সুপারসেভার মডেলের ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ডের নতুন এসি বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। যা দেশের সবচেয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষায় দেখা গেছে ইকো মুডে এক টনের ইনভার্না (সুপারসেভার) এসি চালালে প্রতি ঘন্টায় বিদ্যুৎ বিল আসে মাত্র ২ টাকা ৮৮ পয়সা।
কর্তৃপক্ষ জানায়, অনলাইন অটোমেশনের আওতায় এসির গ্রাহকদের আরো সহজে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে ওয়ালটন। এখন চলছে ক্যাম্পেইন সিজন ৯। এর আওতায় ওয়ালটন এসি কিনে গ্রাহকরা ২১ বছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল ফ্রি পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। নগদ মূল্যের পাশাপাশি ওয়ালটন এসি কিস্তি এবং ইএমআই সুবিধায় কেনার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো ব্র্যান্ডের পুরনো এসি বদলে ২৫ শতাংশ ছাড়ে গ্রাহকরা ওয়ালটনের নতুন এসি কিনতে পারছেন। আছে ফ্রি ইন্সটলেশন সুবিধা।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালটন এসি আইএসও-১৭০২৫ অনুসারে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব নাসদাত-ইউটিএস থেকে মান নিয়ন্ত্রণ সনদ পাওয়ার পরে বাজারজাত করা হয়। তাই এসিতে এক বছরের রিপ্লেসমেন্টের পাশাপাশি ইনভার্টার এসির কম্প্রেসরে ১০ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন। ওয়ালটন এসি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারা দেশে ওয়ালটনের রয়েছে ৭৬টি সার্ভিস সেন্টার। পাশাপাশি সার্ভিস পার্টনারদের মাধ্যমে দেশব্যাপী এসি গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে ওয়ালটন। এদিকে ওয়ালটনের দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলী এবং টেকনিশিয়ানগণ প্রতি ১০০ দিন পর পর এসি ক্রেতাদের ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছেন।