জানতে চাইলে তিনি অর্থসংবাদ’কে বলেন, হয়তো লেনদেন কম হতে পারে কিন্তু মার্কেট খোলা থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসংবাদ’কে বলেন, মানি মার্কেট খোলা থাকলে পুজিবাজার খোলা রাখার বিষয়টি দেশের বাজারের জন্য ইতিবাচক। বর্তমান কমিশনের এটি একটি খুবই ভালো উদ্যোগ। আগেই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বক্তব্য পরিষ্কার করায় এটাকে নিয়ে কেউ গুজব সৃষ্টি করতে পারবে না।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত না হয়ে শেয়ার বিক্রি না করলে অসাধু চক্র শেয়ার হাতিয়ে নিতে পারবেন না। তাই বিনিয়োগকারীদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
এর আগে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশনা মেনে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।পুঁজিবাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের মোবাইল ফোন, ই-মেইল, অনলাইন বা অ্যাপস ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের নেওয়া ১৮ দফা সিদ্ধান্তকে শতভাগ যৌক্তক বলে মনে করে নিংন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউজে ভিড় না জমিয়ে বাসায় থেকে মোবাইলে বা ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে সব ব্রোকারেজ হাউজকে পরামর্শ দেবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জসহ ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। একইভাবে মার্চেন্ট ব্যাংকে পরামর্শ দেবে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।
এছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন ধরনের সভা-সেমিনার হাইব্রিড পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই-সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে এ বার্তা পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিএসইসির এ সিদ্ধান্তটি কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটে নোটিশ আকারে প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী করোনভাইরাসের প্রভাব বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে এক জায়গায় জনসমাগমের মাধ্যমে সভা-সমাবেশ করায় করোনা সংক্রামণের ঝুঁকি রয়েছে। তাই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর এজিএম, ইজিএম ও পরিচালনা পর্ষদ সভা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আয়োজন করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
বৈঠককালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষা যথাযথ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে কমিশনের আদেশের প্রাসঙ্গিক শর্তাবলী মেনে শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাধিকার এবং অন্যান্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, আগামী সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ কথা বলা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, দ্রুত ছড়াতে থাকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার দুই-তিন দিনের মধ্যে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের চিন্তা করছে।
এর আগে লকডাউনের সময় দেশের শেয়ারবাজার বন্ধ ছিল। গত বছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দেশের করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করলে ১৯ মার্চ থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা কমিয়ে দেওয়া হয়। করোনার কারণে সরকার গত বছরের ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে শেয়ারবাজারের লেনদেনও বন্ধ রাখা হয়। সেসময় ৬৬ দিন টানা বন্ধের পর গত বছর ৩১ মে আবার চালু হয়েছিলো শেয়ারবাজারের লেনদেন।