জাটকা সংরক্ষণে আমরা বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী

জাটকা সংরক্ষণে আমরা বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী
‘আজকের জাটকাই আগামী দিনের পরিণত ইলিশ। তাই জাটকা ইলিশ সংরক্ষণে সমন্বিত উদ্যোগ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনগণকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’

৪-১০ এপ্রিল ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২১’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃত ইলিশের স্বাদ, রূপ ও ঘ্রাণ এদেশের কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে। জাটকা সংরক্ষণে জনসচেনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘মুজিববর্ষে শপথ নেব, জাটকা নয় ইলিশ খাব’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশব্যাপী ৪-১০ এপ্রিল ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২১’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পোনা মাছ ছেড়ে মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন অভিযানের সূচনা করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা গত ১২ বছরে সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০, মৎস্য ও মৎস্য পণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০২০, মৎস্যখাদ্য ও পশুখাদ্য উৎপাদন এবং বিপণন ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০২০, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৮, মৎস্য সঙ্গনিরোধ আইন-২০১৮, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন আইন-২০১২, মৎস্য খাদ্য ও পশুখাদ্য আইন-২০১০, মৎস্য হ্যাচারি আইন-২০১০ প্রণয়ন করেছি। আমাদের সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট মাছের উৎপাদন ৪৫.০৩ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে, যেখানে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে মোট মৎস্য উৎপাদন ছিল মাত্র ২৭.০১ লাখ মেট্রিক টন। বিশ্বে অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ তৃতীয়, বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশের অবদান প্রায় ১২.১৫ শতাংশ। ইলিশের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সরকার বিজ্ঞানসম্মত কৌশল গ্রহণ করেছে। ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যথাযথ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ‘চাঁদপুরস্থ নদী কেন্দ্রে ইলিশ গবেষণা জোরদারকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। প্রতিবছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন মা ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ ও বিপণন নিষিদ্ধকরণ, ইলিশের পরিভ্রমণ পথকে সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ৩,১৮৮ বর্গ কিলোমিটার জলসীমাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা, সমুদ্রে ৬৫ দিন ইলিশসহ সকল প্রকার মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম, জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম, সম্মিলিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় পূর্বের ধারাবাহিকতায় জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮১৫টি জেলে পরিবারকে এবং মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৪২টি জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছি। আমাদের সরকার জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ইলিশের টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে ২৪৬.২৭ কোটি টাকার ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। জাটকা সংরক্ষণ ও উন্নয়নে আমাদের সময়োপযোগী ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশব্যাপী ইলিশের সহজলভ্যতা ও আকার বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ আজ সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমায় এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে, যেখানে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে বিশ্বে আমরা ইলিশ উৎপাদনে প্রথম স্থান অর্জন করেছি। মুজিববর্ষে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ -২০২১’ উপলক্ষে গৃহীত সকল আয়োজনের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।’

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু