মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শাখার দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা একটি অনলাইন পোর্টালকে বলেন, সরকার লকডাউন দিচ্ছে শনিবার পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমন ঘোষণার পর চলমান অ্যাসাইনমেন্ট ও অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে জানানো হয়, অ্যাসাইনমেন্ট ও অনলাইন ক্লাস করতে শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্কুলে আসতে হচ্ছে। সরকার যেহেতু ঘর থেকে বের হওয়া এবং চলাফেরায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তাই এ দুটি কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর বেলাল হোসাইন রোববার (৪ এপ্রিল) দুপুরে একটি অনলাইন পোর্টালকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনাটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে আমাদের কাছে আসবে। তারপর এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হবে।
একজন উপ-পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুম বৈঠকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, অ্যাসাইনমেন্ট ও অনলাইন ক্লাস বন্ধ রাখা হবে। অর্থাৎ রোববার পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট যতটুকু শেষ হয়েছে ততটুকু থাকবে। পরবর্তীতে যখন আবার খোলা হবে এ জায়গা থেকে শুরু হবে।
জানা গেছে, মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একাধিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যেতে হবে।
এদিকে গত বছরের মতো এ বছরও ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট ও নির্ধারিত কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন করার জন্য ২০ মার্চ থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সপ্তাহ শুরুর দুদিন আগে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট ও নির্ধারিত কাজ প্রকাশ করা হবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ওয়েবসাইটে। সপ্তাহ শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের সেই অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ শেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমা দিয়ে (সরাসরি/অনলাইনে) নতুন অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণ করবে। অনলাইনে বা সামাজিক দূরত্ব মেনে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া এবং গ্রহণ করতে বলা হয়েছে স্কুলগুলোকে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে গত বছর ১৮ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে নির্ধারিত পাঠ্যসূচির কার্যক্রম শুরু করা হয়ে ওঠেনি। এ কারণে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচিকে পুনর্বিন্যাস করে শিক্ষার্থীদের শিখনপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে গত বছরের মতো ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ধারাবাহিকভাবে অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যে কওমি মাদরাসার দাওয়াতে হাদিস পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড- আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। রোববার (৪ এপ্রিল) বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের মনিটরিং সেল থেকে জানানো হয়, ৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবারের মধ্যে দাওরায়ে হাদিসের অবশিষ্ট ৮ বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হবে। সকাল ও বিকেল দুই বেলা দুইটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। সকালে পরীক্ষা শুরু হবে ৯টায়, শেষ হবে ১১ টা ৪৫ মিনিটে। আর বিকেলে পরীক্ষা শুরু হবে ২টায়, শেষ হবে ৪টা ৪৫ মিনিটে। প্রতি বিষয়ের দুইটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে বিধিনিষেধের মধ্যে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষকরা স্ব স্ব মারকাযে (কেন্দ্র) স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করবে।