বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সরকার করোনা সংকট মোকাবিলা এবং টিকা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে তিনটি ঋণচুক্তি সম্পন্ন করেছে। ঋণচুক্তিতে মোট ঋণের পরিমাণ ১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। টিকা দেওয়াসহ ভবিষ্যত সংকট মোকাবিলা, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত করতে এই ঋণ নিয়েছে সরকার। এছাড়া কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইলেকট্রনিক সরকারি ক্রয় (ই-জিপি) কভারেজ বাড়াতে বাংলাদেশকে বাড়তি সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেন্স’ প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত ঋণ সহায়তা হিসেবে ৫০ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যেই ২০২০ সালের ১০ এপ্রিল ১০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি। প্রকল্পের আওতায় এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) কাছ থেকেও ১০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া গেছে। এর ধারাবাহিকতায় টিকা কেনার জন্য চলমান প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে টিকা কেনা ও সরবরাহ করা। এছাড়া কোভ্যাক্স থেকে অগ্রিম টিকা কেনার মাধ্যমে দেশের মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশকে টিকা দেওয়া, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ভ্যাকসিন টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো এবং টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণে কোল্ড চেইন সিস্টেম অক্ষুণ্ণ রাখার মাধ্যমে টিকার গুণগত মান নিশ্চিত করা।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর উন্নয়ন’ প্রকল্পে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এটি দেশের শিল্প খাতের জন্য মডেল হিসেবে কাজ করবে। একইসঙ্গে এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় ইকোনমিক জোন, যার মোট আয়তন ৩০ হাজার একর। এতে কর্মসংস্থান হবে অন্তত ১৫ লাখ মানুষের।
এছাড়া কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ইলেকট্রনিক সরকারি ক্রয় (ই-জিপি) কভারেজ বাড়াতে বাংলাদেশকে চার কোটি ডলার বাড়তি সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা। সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) আওতায় বাস্তবায়নাধীন সিপিটিইউর ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্টের (ডিআইএমএপিপিপি) আওতায় এমন উদ্যোগ। এই অর্থায়ন জরুরি ক্রয় প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে এবং টেকসই ক্রয়ের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে সাহায্য করবে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, করোনা সংকট বিশ্বজুড়ে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এখনো বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ ভালোভাবে মোকাবিলা করেছে। তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন টিকা কার্যক্রম জোরদার করা। মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করবে দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যত। বিশ্বব্যাংক ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।