বুধবার (২৮ এপ্রিল) ‘প্রটেক্ট ইউর হিয়ারিং : প্রটেক্ট ইউর হেলথ’ প্রতিপাদ্যে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান। পরিবেশ অধিদফতরের ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’ এ কর্মশালার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, শব্দদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের প্রত্যেককে শব্দ সচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় শব্দ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে শিশুদের শৈশব থেকেই শব্দ সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। সবাই মিলেই নিরাপদ আবাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা গড়ে তুলব ‘শব্দদূষণমুক্ত পরিবেশ, শেষ হাসিনার বাংলাদেশ’।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকার শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সচিবালয়ের চারপাশে নীরব এলাকা বাস্তবায়ন করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন করা হবে। বর্তমানে আগারগাঁও এলাকাসহ সকল (৯টি) সিটি করপোরেশনে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে যেখানে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সকল নীরব এলাকা শব্দমুক্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদফতর, বাংলাদেশ পুলিশ, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করবে। প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন প্রবর্তন এবং কঠোরভাবে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহর সহনীয় মাত্রার চেয়ে তিনগুণ তীব্রতার শব্দ দূষণে আক্রান্ত। এর ফলে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিনিয়ত অসচেতনতাবশত, অকারণেই ঘরে এবং ঘরের বাইরে শব্দ দূষণ করা হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় যানবাহনে অযাচিত হর্নের ব্যবহার, নির্মাণ কাজে সৃষ্ট শব্দ, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাইক/সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে সৃষ্ট শব্দ দ্বারা প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণ হচ্ছে যা মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যহত করছে।
তিনি বলেন, উচ্চ শব্দ কম সময়ের জন্য হলেও তা শ্রবণ শক্তির জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১.১ বিলিয়ন মানুষ (১২-৩৫ বছর বয়সী) অত্যধিক শব্দযুক্ত বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। মানসম্মত জীবন যাপনের লক্ষ্যে শব্দদূষণের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করতে সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানাই।
পরিবেশ অধিদফতরের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত মহাপরিচালক মোঃ. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য প্রফেসর প্রাণ গোপাল দত্ত এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও পরিবেশ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর (যুগ্ম সচিব)।