বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গ্রাহকদের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার পর সংগ্রহ করা নগদ টাকা পরিবহনে কর্মীরা নানা রকম ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন। কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের পণ্য স্থানান্তর ও বিতরণ কার্যক্রম থেকে পণ্যমূল্যের বিপরীতে নগদ অর্থের লেনদেন প্রকৃতপক্ষে পরিশোধ কার্যক্রমের আওতাভুক্ত। দেশের সব পরিশোধ কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যপরিধির আওতাধীন। এ জন্য কুরিয়ার সেবায় প্রাপ্ত মূল্যের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনের জন্য এই নীতিমালা দেওয়া হলো।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিএসএবি) সদস্যভুক্ত কুরিয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকে ‘সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট’ খুলতে পারবে। প্রতিটি কুরিয়ার সার্ভিসের ক্যাশ অন ডেলিভারি এবং কমিশন বুকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ ও পরিশোধ প্রক্রিয়ায় তথ্য সংরক্ষণের জন্য সেন্ট্রাল ডেটা সিস্টেম চালু থাকতে হবে, যা সিএসএবি কর্তৃক প্রত্যায়িত হতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী পণ্য বিক্রেতার ব্যাংক বা এমএফএস হিসাব না থাকলে তার প্রাপ্য অর্থের তালিকা ব্যাংকে জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রেতার পক্ষে নগদ অর্থ নিজেদের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করে পরিশোধ করতে পারবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে ক্যাশ অন ডেলিভারি বা কমিশন বুকিংয়ের বিপরীতে সংগৃহীত পণ্যমূল্য জমা, পণ্য পরিবহনের কুরিয়ার ফি, বিক্রেতার পক্ষে অর্থ গ্রহণ ও তার কাছে স্থানান্তর বাবদ সার্ভিস চার্জ এবং বিক্রেতার অর্থ পরিশোধ করা যাবে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভাউচারের বিপরীতে ক্রেতার কাছ থেকে এ ধরনের অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। পণ্যের ঘোষিত মূল্যের ভাউচার সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সেন্ট্রাল ডেটা সিস্টেমে দৈনিক ভিত্তিতে সংরক্ষণ করতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী পণ্য বিক্রেতার ব্যাংক বা এমএফএস হিসাব না থাকলে তার প্রাপ্য অর্থের তালিকা ব্যাংকে জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রেতার পক্ষে নগদ অর্থ নিজেদের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করে পরিশোধ করতে পারবে। তবে এ নগদ উত্তোলনের পরিমাণ কোনোভাবেই একক পণ্যমূল্য বাবদ পাঁচ হাজার টাকার বেশি হবে না।
এ ধরনের লেনদেনের তথ্য ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হবে। ঘোষিত মূল্যের সঙ্গে কোনো ধরনের অসংগতি ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হিসাব স্থগিত বা বন্ধ করতে পারবে ব্যাংক। এ ছাড়া কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব একটি বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা থাকতে হবে। অর্থসংক্রান্ত বিরোধের উৎপত্তি হলে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হবে।