শনিবার (৮ মে) ‘চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি’ শিরোনামে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. আব্দুর রবের নেতৃত্বে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। ওই হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আসিফ খান, যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী এম এ কবির চৌধুরী, সহকারী সার্জন অমি দেব ও চিকিৎসা কর্মকর্তা মোরতাহিনা রশিদ এ গবেষণায় অংশ নেন।
গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালিত এই গবেষণায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫৩০ জন (আরটি–পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ ৯৪১ জন এবং নেগেটিভ ৫৮৯ জন) ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর পাশাপাশি ঘরে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়াদের ওপর এই গবেষণা চলে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিডে আক্রান্তদের ৯২ শতাংশের জ্বর ছিল, কাশি ছিল ৬৩ শতাংশের, ঘ্রাণশক্তি লোপ পায় ৫২ শতাংশের। এ ছাড়া গলাব্যথা, মাথাব্যথা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ ছিল। আক্রান্তদের ১৫ শতাংশের ডায়াবেটিস, ২৩ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপ, ৯ শতাংশের শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা ও হৃদ্রোগ ইত্যাদি ছিল। এ ছাড়া এইডস ও ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও করোনায় আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়ার বিষয়টি গবেষণায় উঠে এসেছে। তাদের শরীরে অ্যান্টিবডিও পাওয়া গেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরে প্রায় ৫৭ শতাংশের কোনো না কোনো উপসর্গ দীর্ঘদিন ধরে ছিল। এগুলোর শারীরিক দুর্বলতা, ব্যথা, দুশ্চিন্তা, অবসাদ, কাশি, চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ উল্লেখযোগ্য।
গবেষকেরা জানান, আরটি–পিসিআর পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হওয়া ও নেগেটিভ হওয়া মিলে ৬৫ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। তবে পজিটিভ হয়ে সুস্থ হওয়ার পর অনেকের শরীরে অ্যান্টিবডি ছিল না। পজিটিভ হওয়া ৯৪১ জনের মধ্যে ১০৭ জন এবং নেগেটিভ হওয়া ৫৮৯ জনের মধ্যে ৪৩৬ জনের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি। গবেষণায় পুরুষের অংশগ্রহণ ছিল ৭৬ শতাংশ। বাকিরা ছিলেন নারী।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া ডা. আবদুর রব বলেন, কোভিড–১৯ থেকে সেরে ওঠার পর ৯ মাস পর্যন্ত অনেকের শরীরে আ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আবার পজিটিভ অনেকের অ্যান্টিবডি ছিল না। এসব তথ্য আরও বিশদে বিশ্লেষণ করে কোনো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।