রোববার (৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রীর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প থেকে ৪ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত খামারিকে প্রায় ৫৫৪ কোটি টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। আরও প্রায় ২ লাখ খামারিকে প্রায় ২৯২ কোটি টাকা আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
মাছ, মাংস, দুধ, ডিম শরীরের পুষ্টি ও আমিষের জন্য প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেজন্য আমরা গতবছর ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করেছিলাম। গত বছর ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা পণ্য ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে বিক্রি করতে পেরেছি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যবস্থা করেছিলাম।
ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত প্রায় ২২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার মাছ, ডিম, দুধ এবং মাংসসহ (গরু, খাসি ও মুরগী) দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, গত একমাসে সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র পরিচালনা করা হয়েছে। প্রতি জেলায় প্রতিদিন গড়ে ১০টি করে ভ্রাম্যমাণ গাড়ি ভাড়া করে এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। ঢাকা শহরে ৩০ স্পটে ভ্রাম্যমাণ বিক্রির কার্যক্রম চলছে।
তিনি জানান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থায় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, সোনালী মুরগী প্রতি কেজি ২১০ টাকা, ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ১২০ টাকা, ডিম প্রতিটি ৬ টাকা এবং প্যাকেট দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে সরকার ঘোষিত চলমান বিধি-নিষেধের মধ্যেও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার কার্যক্রম বিশেষ করে সম্প্রসারণ, কৃত্রিম প্রজনন, টিকাদান, চিকিৎসা, পরামর্শ সেবা প্রদান এবং সরকারি খামারে রেনু-পোনা উৎপাদন ও সরবরাহ, হাঁস-মুরগী ও গবাদিপশুর বাচ্চা উৎপাদন-বন্টন অব্যাহত রাখা হয়েছে বলেও জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সব কার্যক্রম মনিটর এবং উদ্ভুত সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে। অনলাইন-এসএমএস সার্ভিসের মাধ্যমে খামারিকে সেবা দেওয়া এবং অনলাইনে আমদানি-রফতানির জন্য এনওসির আবেদন গ্রহণ ও অনুমোদন করে ওয়েবসাইটে দেওয়া হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, প্রাণিজ পণ্য আমদানি-রফতানি সচল রাখার জন্য এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব ল্যাব চালু রাখাসহ সব ধরনের পরীক্ষা ও পরিদর্শন কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। বাজার দর স্থিতিশীল রাখা এবং সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখার জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে খামারিদের সরাসরি বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সংযু্ক্ত করা হয়েছে।