ফেসবুকে তার বন্ধুর সংখ্যা ৫ হাজার। পুলিশের এএসপি ও সাইবার এক্সপার্ট পরিচয় ব্যবহার করে ফেসবুকে বহু নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। তারপর তিনি প্রতারণা করতেন। ইদের দিন অনার্স পড়ুয়া এক মেয়ের বন্ধুর সাথে রাজধানীর হাতিরঝিলে দেখা করতে এসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারের জালে ধরা পরেন প্রতারক জাকারিয়া।
অনলাইনে নিজেকে এএসপি পরিচয় দেওয়া প্রতারক জাকারিয়া অফলাইনে দেখা করতে এসে সিআইডির কাছে আটক হয়। ২১ মে (শুক্রবার) সিআইডির সাইবার পুলিশের বিশেষ সুপার (এসএসপি) রেজাউল মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাজধানীর বনশ্রীর ব্লু-অলিভ রেস্টুরেন্টের ওয়েটার জাকারিয়া পোশাকে, স্মার্টনেস ও সুদর্শন চেহারা দেখে হোটেল ম্যানেজার তাকে ফুডপান্ডা, উবার ইটস প্রভৃতি অনলাইনে খাবার অর্ডারের জন্য কাজ দেন। এর জন্য তাকে স্যামসাংয়ের একটি ট্যাব দেওয়া হয়। সাড়ে ৪ হাজার টাকা বেতনে কোনো রকম জীবন চলে তার। এরপর অনলাইনে যোগাযোগ হয় চট্টগ্রামের আবির নামে এক ব্যক্তির সাথে। তার পরামর্শে ফেসবুকে নিজেকে বদলে ফেলেন জাকারিয়া।
তিনি জানান, জাকারিয়া ফেসবুকে নিজেকে প্রকাশ করেন যে তিনি একজন সাইবার ফরেনসিক এক্সপার্ট। ক্রিমিনাল জাস্টিসে ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করেছেন। এছাড়াও চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিগ্রি নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন এ প্রতারক।
মানুষের সাথে প্রতারণা করতে প্রতিনিয়ত সিআইডি সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজ ফলো করতেন। ফেসবুকে নারী বন্ধুদের কাছে নিজেকে এএসপি পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করতেন। এছাড়া পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের ফেসবুকে যুক্ত হন। নিয়মিত পোস্ট দেওয়াসহ বিভিন্ন শুভেচ্ছা ও মেসেজ দিয়ে আসছিলেন।
তিনি জানান, সম্প্রতি রাজধানীর হাতিঝিল এলাকায় নিজেকে পুলিশের এএসপি পরিচয় দিয়ে এক শিক্ষার্থীর সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। তখন সিআইডির সাইবার পুলিশে সেন্টারের একটি টিম তাকে আটক করে।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের এ কর্মকর্তা জানান, অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা সাজার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ ধারা অনুযায়ী একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। আটকের পর আদালতের নির্দেশে প্রতারক জাকারিয়া রিমান্ডে সিআইডির হেফাজতে রয়েছে।