সোমবার (৩১ মে) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও উপাচার্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক জরুরি মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মঙ্গলবার (০১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি জানায়, শর্ত সাপেক্ষে দেশের সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে সরাসরি ও অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের পরামর্শে পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করতে হবে।
একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়ার আওতায় নিয়ে আসাসহ ৪টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও মহাসচিব, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সচিব যুক্ত ছিলেন।
সভার শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা এবং খুলে দেওয়ার বিষয়ে ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সচল ও নিরাপদ রাখার স্বার্থে বাস্তবতার নিরিখে চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হলো-
১. প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদানের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই টিকা প্রদানের কর্মসূচি আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের দিয়ে শুরু হবে।
২. ইতোপূর্বে ইউজিসি কর্তৃক শর্তসাপেক্ষে সরাসরি উপস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য যে দুইটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদনের প্রেক্ষিতে কার্যকর করে বিষয়বস্তুর ওপর চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করা হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ -এর টিকা প্রদান সম্পন্ন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সরাসরি উপস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম আগের মতো চালু হবে।
৪. কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীগণের শিক্ষাজীবনে যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব সক্ষমতা ও বাস্তবতা অনুযায়ী একটি রিকভারি প্ল্যান প্রস্তুত করে তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এই রিকভারি প্ল্যানের একটি সাধারণ গাইড লাইন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রস্তুত করে বিশ্ববিদ্যালগুলোয় পাঠাবে।
দেশের সকল প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এমন আশাজাগানিয়া সম্ভাবনায় সবাই পুলকিত। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'র ইংলিশ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী-অধ্যাপক এস. আল-জুবায়ের বলেন, ইউজিসি কতৃক বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এমন আশাজাগানিয়া বার্তায় সমগ্র দেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ অভিভাবকরা ও খুবই স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।
শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা এবার ফোন-কলে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলার খবর নিচ্ছেন। করোনাভাইরাস আসার পরে এবারই আমরা ইউজিসি থেকে এমন ইতিবাচক সাড়া পেলাম। আশা করি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী করোনার প্রয়জনীয় বিধিনিষেধ ঠিক করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেবার সিদ্ধান্ত নেবেন।'