গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে চাকরি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন বিশ্বের ৫২ শতাংশ পাইলট। তবে ২০২০ সালে এই শঙ্কা ৮২ শতাংশ পাইলটের মধ্যে দেখা দিয়েছে।
শঙ্কার কারণ হিসেবে ৬৫ শতাংশ পাইলট বলেছেন কোভিড-১৯। ২১ শতাংশ বলেছেন ফ্লাইট চলাচল অনিয়মিত হওয়ায় এয়ারলাইন্সগুলোর আর্থিক দৈন্যতার কথা।
জরিপে অংশ নেওয়া ৫৪ শতাংশ পাইলট আগামী ১২ মাসের মধ্যে চাকরি ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানান। বর্তমান পরিস্থিতিতে মানসিক অবস্থা জানতে চাইলে পাইলটরা জানান- তারা চিন্তিত, ভীত এবং প্রচণ্ড মানসিক চাপ অনুভব করছেন। তবে ২০ শতাংশ পাইলট অবশ্য নিজেকে সুখী এবং সফল দাবি করেছেন।
পাইলট হওয়ার জন্য পড়াশুনা করেছেন এবং ট্রেনিং নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ বর্তমানে ফ্লাইট পরিচালনা করছেন, ৩০ শতাংশ বেকার, ১৭ শতাংশ চাকরিতে যোগদান করে বসে আছেন (নানা কারণে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছেন না), ৬ শতাংশ এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য বিভাগে কাজ করছেন এবং ৪ শতাংশ নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাইলট হিসেবে ফ্লাইট পরিচালনা করছেন।
বেকার থাকা অধিকাংশই পাইলটই করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ নতুন করে পাইলটের চাকরি খুঁজছেন, ১৫ শতাংশ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর চাকরি খুঁজবেন, ৯ শতাংশ অন্য খাতে (এভিয়েশন ছাড়া) চাকরি খুঁজছেন, ৭ শতাংশ পাইলট অবসরে চলে গেছেন এবং ৩ শতাংশ পাইলট চাকরি নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে ইন্টার্ভিউ দিয়েছেন।
বিশ্বের এভিয়েশন পরিস্থিতি আগের মতো স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে? জানতে চাইলে পাইলটদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ পাইলট বলেছেন দুই বছর লেগে যেতে পারে। তবে ৬ ভাগ পাইলট বলছেন, এই খাত কখনোই আর আগের মতো স্বাভাবিক হবে না।
ফ্লাইট গ্লোবাল জানিয়েছে, গোটা বিশ্বের এভিয়েশন খাত এখন কোভিড-১৯ এর আঘাতে আক্রান্ত। সংকটময় এই সময়ে গুজ রিক্রুটমেন্ট এবং ফ্লাইট গ্লোবাল এই জরিপ ও গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করে। গবেষণায় করোনাকালীন এক বছরে এভিয়েশন খাতের বাস্তব চিত্রসহ নানা দিক তুলে ধরা হয়েছ।
জরিপটিতে বর্তমানে কর্মরত ও সাবেক পাইলটদের (ফার্স্ট অফিসার, সেকেন্ড অফিসার ও ক্যাডেট) সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাদের ৩০টি প্রশ্ন করা হয়েছে। সেসব প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতেই গবেষণাটি করা হয়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া পাইলটদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ ইউরোপের, ১৯ শতাংশ মধ্যপ্রাচ্যের ও আফ্রিকার, ১৮ শতাংশ এশিয়ার, ১৮ শতাংশ নর্থ ও সাউথ আফ্রিকার এবং ২ শতাংশ চীনের।