মঙ্গলবার (১৫ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা ঠিক রেখে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য এবং জীবনমান সুরক্ষার জন্য এই আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের এই প্রাপ্তি। তিনি বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীরই কৃতিত্ব।
রোববার (১৩ জুন) জেনেভায় আইএলওর শ্রম সম্মেলনের ১০৯তম অধিবেশনে এই নির্বাচন বাংলাদেশের পক্ষে ভোট পড়েছে ২০১টি। এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশ সবোর্চ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইএলওর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
বিবৃতিতে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গত বছর করোনা মহামারির শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিশ্চিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিশ্চিত করেন। দেশের সকল মানুষকে সুরক্ষায় ৩১ দফা নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে আমরা সারা দেশে মাঠ পর্যায়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, মালিক এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ২৩টি বিশেষ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করি। কমিটির সদস্যগণ আইএলও এর সহযোগিতায় তৈরি করা পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশিকা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক পোস্টার কারখানা পর্যায়ে বিলি করছে। এর সাথে শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে শ্রমঘন এলাকায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ মাইকিং এর ব্যবস্থা করেছেন। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এ অধিদপ্তরের চিকিৎসকগণের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, করোনার এই দুর্যোগকালীন সময়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল হতে গত এক বছরে প্রায় প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত ৩,২৬৯ জন শ্রমিককে চিকিৎসা সহায়তা বাবদ ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা, কর্মরত অবস্থায় মৃত ৯২ জন শ্রমিকের পরিবারকে ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, শ্রমিকদের সন্তানের শিক্ষা সহায়তা বাবদ ১৬৬ জনকে ৫২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইএলওর পরিচালনা পর্ষদে এটি বাংলাদেশের টানা তৃতীয় জয়। এর আগে ২০১৪-২০১৭ এবং ২০১৭-২০২১ মেয়াদেও আইএলওর পরিচালনা পর্ষদের উপসদস্য হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ। নির্বাচিত হওয়ার ফলে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা বহাল রাখার ক্ষেত্রে সদস্যদের সমর্থন আদায়ে সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। শ্রম প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনা প্রক্রিয়ায় অংশ নেন মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম এবং জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমান।