রোববার (২৭ জুন) দুপুরে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে এই ঘোষণা দেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গত ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী মেয়রের এটিই প্রথম বাজেট।
একই অধিবেশনে ২০২০-২১ অর্থবছরের ১ হাজার ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট ঘোষণা করা হয়। এই অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ২ হাজার ৪৩৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ৪১ শতাংশ।
আগামী অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেটে আয়ের বড় উৎস ধরা হয়েছে উন্নয়ন অনুদান খাতে। এই খাতে আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। আর নিজস্ব উৎসে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে তিন ধরনের কর বাবদ মোট আয় ধরা হয়েছে ৫৩৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে বকেয়া কর ও অভিকর খাতে সর্বোচ্চ ২১৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে। হাল কর ও অভিকর খাতে ১৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং অন্যান্য কর বাবদ ১৩২ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত অর্থবছরে (২০২০-২১) তিন ধরনের করে মোট আয় ধরা হয়েছিল ৪৭৯ কোটি ৪২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুসারে ওই তিন ধরনের কর খাতে আয় হয়েছে ২৪০ কোটি ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সম্ভাব্য আয়ের বাকি টাকা আসবে ত্রাণ সাহায্য ও অন্যান্য উৎস থেকে।
এবারের বাজেটের বড় অংশ ব্যয় হবে বকেয়া দেনা পরিশোধে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৩৪ কোটি টাকা। উন্নয়ন খাতে ব্যয় হবে ৮৮২ কোটি টাকা। আর বেতন-ভাতা এবং পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৪০ কোটি টাকা।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়রের দায়িত্ব নেওয়া মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বাজেট অধিবেশনে বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয়ের উৎসগুলোর পরিধি বাড়বে। রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়াকে সহজতর করা হবে, যাতে নগরবাসী কর দিতে উৎসাহিত হন। তবে চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের ওপর গৃহকরসহ কোনো ধরনের অযৌক্তিক কর আরোপ করা হবে না। তবে কর পরিশোধের ক্ষেত্রে সবার সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাজেট অধিবেশনে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সরকারের কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে নগর উন্নয়ন সম্ভব নয়। সবার সহযোগিতা, চিন্তাচেতনা, মেধা ও সঠিক পরামর্শ বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকব। রাজস্ব আদায়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সিটি করপোরেশন নিয়মিত পত্র ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা গৃহকর আদায়ের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মেয়র আধুনিক নগর ভবন, স্মার্ট সিটি প্রকল্প, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন, নতুন সড়ক, টার্মিনাল নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনার কথা জানান।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে বাজেট বিবরণী উপস্থাপন করেন অর্থ ও সংস্থাপনবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. ইসমাইল। উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর, মো. গিয়াস উদ্দিন ও আফরোজা কালাম, সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।