গত বছরের নভেম্বরে জারি করা অবৈধ বিদেশি কর্মীদের রিক্যালিব্রেশন নামে থ্রি-ডি সেক্টরে বৈধতা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে মালয়েশিয়া। পরে চলতি বছরের ২২ এপ্রিল দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জয়নুদিন ও মানব সম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানানের যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, থ্রি-ডি সেক্টরের পাশাপাশি সার্ভিস সেক্টরেও এই কর্মসূচির আওতায় বিদেশি কর্মীরা বৈধ হতে পারবেন।
এদিকে গত ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ছিল। ১ জুলাই ইমিগ্রেশনের ওয়েভের তথ্য মতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন বলেও একটি সূত্রে জানা গেছে।
রিক্যালিব্রেশনের আওতায় পুনরুদ্ধার কর্মসূচি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ২ লাখেরও বেশি অভিবাসী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার অভিবাসী বৈধতা পেতে আবেদন করেছেন। বাকি প্রায় ১ লাখ অবৈধ অভিবাসী নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামে বিদেশিদের নিবন্ধিত করতে প্রায় ৫০৯ জন নিবন্ধিত নিয়োগকর্তা কাজ করছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
কর্মসূচি শুরুর আগে বৈধভাবে অবস্থানের জন্য ‘সোর্স কান্ট্রি’ হিসেবে পরিচিত ১৫টি দেশের নাগরিকদের অনুরোধ করেছে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস। যা মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী এবং নিয়োগকর্তাদের শৃঙ্খলিত করতে সরকারের একটি প্রচেষ্টা। শ্রমিকদের বৈধকরণের বিষয়ে ১৫টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের এক বৈঠকে প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তুলে ধরেছিলেন দেশটির ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক সেরি খায়রুল দাজাইমি দাউদ।
এর আওতায় বৈধ হতে নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করে কিছু যোগ্যতা চেয়েছিল দেশটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ। যারা বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় এসে ভিসায় উল্লেখিত নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করছেন কিন্তু ভিসা রিনিউ করেননি বা ওভার স্টে হয়েছে, যারা নিজ কোম্পানিতে কাজ করেননি এবং যারা নিয়োগ পাওয়া প্রতিষ্ঠান থেকে পালিয়ে গেছেন তারা এই প্রক্রিয়ায় বৈধ হতে পারবেন। তবে, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যারা এমন অনিয়ম করেছেন তারাই এই সুযোগ পাবেন। এর পরবর্তী সময়ে কেউ এসব অপরাধ করলে তারা এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ পাবেন না।
২০১৬ সালে ঘোষিত ‘রি-হায়ারিং’ বৈধকরণ কর্মসূচির সঙ্গে চলমান এই রিক্যালিব্রেশনের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। বিষয়টি বুঝতে না পারলে রয়েছে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি। যেমন- রি-হায়ারিংয়ে নৌ, সাগর বা স্থলপথে অবৈধভাবে যারা অনুপ্রবেশ করেছিল তাদেরও বৈধতা দিয়েছিল দেশটি। এ কর্মসূচিতে সে সুযোগ নেই। ওইবার বিভিন্ন ভিসাধারীদেরও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে চলমান করোনা মহামারির কারণে কোনো দেশেই নতুন করে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সরকারগুলো এখন নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি দেশে থাকা বিদেশিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার আওতায় আনারও কৌশল নিয়েছে মালয়েশিয়া।