যদিও এবার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় ১৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তবুও আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে বিগত অর্থবছর শেষে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতিতে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রাজস্ব বোর্ডের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। তবে চলতি ২০২১-২২ বাজেট ঘোষণার আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২৯ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছিল, যা অনুমোদিত হয়। ফলে নতুন লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় তিন লাখ এক হাজার কোটি টাকা।
আয়কর, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট এবং আমদানি শুল্ক— এই তিন উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ করে সরকার।
রাজস্ব বোর্ডের সর্বশেষ সাময়িক পরিসংখ্যান বলছে, সমাপ্ত অর্থবছরে আয়কর থেকে আদায় হয়েছে ৮৫ হাজার কোটি টাকা। যদিও এ খাতে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৯৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আয়কর খাতে ঘাটতি দাঁড়ায় ১২ হাজার কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের অন্যতম উৎস ভ্যাটে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ১৬ হাজার কোটি টাকা।
আর আমদানি শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। যদিও এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা। ফলে আমদানি পর্যায়ে ঘাটতি দাঁড়ায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।
বড় প্রবৃদ্ধির পেছনে গত বছর কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে মূল কারণ বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজস্ব বোর্ড সূত্র বলছে, করোনার মধ্যেও গত ২৫ মে পর্যন্ত ১০ হাজার ৪০৪ জন ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ গ্রহণ করেছেন। এর ফলে ১৪ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা হয়েছে। কর হিসাবে রাজস্ব বোর্ড পেয়েছে এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা।
সমাপ্ত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের চিত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি রাজস্ব এসেছে ভ্যাট থেকে (৩৯ শতাংশের বেশি)। অর্থাৎ এই খাত থেকে এসেছে প্রায় ৪০ শতাংশ রাজস্ব। আর ৩৫ শতাংশ আসে আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর থেকে। বাকি রাজস্ব এসেছে আমদানি শুল্ক থেকে।
নতুন ২০২১-২২ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে এবার মোট রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হতে হবে প্রায় ২৩ শতাংশ।