সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর এমনকি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর যাতে করে করোনাভাইরাসের কোন প্রভাব না পড়ে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে সরকার অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) প্রধানমন্ত্রীর এমন সময়োপযোগী ও অর্থনীতিবান্ধব গৃহীত সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। একই সঙ্গে রপ্তানিমুখী শিল্প সুরক্ষায় শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধের সুবিধার্থে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করায় ডিসিসিআই বর্তমান সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এ উদ্যোগ রপ্তানিমুখী শিল্পকে কার্যাদেশ বাতিল, পণ্য পাঠাতে বিলম্ব এবং রপ্তানি আদেশ হ্রাস পাওয়ার কারণে তাদের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করবে। ফরমাল (প্রচলিত) ও ইনফরমাল (অপ্রচলিত) খাতে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ (এমএসএমই) অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে এই এমএসএমই’দের আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অর্থনীতির সব স্তরে এমএসএমই’র অন্তর্ভুক্ত সব খাত করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক এমএসএমই সীমিত বেচা-কেনা ও পুঁজি সংকটের কারণে খুব খারাপ সময় অতিবাহিত করছে। তাদের অনেকেই সময়মতো শ্রমিক এবং কর্মচারীদের বেতনাদি পরিশোধ করতে পারছে না, যা বেকারত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করেছে। এ দুঃসময়ে ঢাকা চেম্বার সরকারকে স্থানীয় এমএসএমই’র ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা ও এমএসএমই সুরক্ষায় স্বল্প এবং মধ্য মেয়াদি আর্থিক, অনার্থিক নীতি পরিকল্পনা নির্ভর সহায়তা প্রদান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া এমএসএমই এবং অপ্রচলিত খাতের সুরক্ষায় বেতনাদি পরিশোধের সুযোগ করে দিতে ডিসিসিআই সরকারকে ১ শতাংশ সুদে ৩ বছর মেয়াদি একটি জরুরি তহবিল গঠন করতে বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছে। যে সব এমএসএমই’র বার্ষিক টার্নওভার ১ কোটি টাকা তাদের জন্য ১ শতাংশ আর যে সব এমএসএমই’র বার্ষিক টার্নওভার ১ কোটি টাকার উপর তাদের জন্য ২ শতাংশ সুদ হারে ওই তহবিল থেকে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে। সারাদেশে বিসিক শিল্প নগরীর অন্তর্ভুক্ত কারখানাসমূহও এ বিশেষ জরুরি তহবিলের আওতায় আসতে পারে। আর এই ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে এমএসএমইর জন্য ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ড প্রদান করা যেতে পারে।
‘এমএসএমই’র ক্ষেত্রে অনাদায়ী দেনাসমূহ আদায় হওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়বে কেননা সব ব্যবসায়ীরাই একই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অনিশ্চিত সময়ে এমএসএমই’র জন্য তারল্য সংকট দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিসিসিআই এমএসএমই’র জন্য প্রদত্ত ঋণের সুদ আগামী ১ বছরের জন্য মওকুফ করার আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি ডিসিসিআই এমএসএমই’র অর্থায়ন সহজলভ্য করতে স্বল্প সুদে এবং সহজতর জামানত শর্তে বিদ্যমান পুনঃঅর্থায়ন (এসএমই রিফিন্যান্সিং) তহবিলকে পূর্ব-অর্থায়ন (এসএমই প্রিফিন্যান্সিং) তহবিলে রূপান্তরের সুপারিশ করছে। এহেন কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তারল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।’
‘স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্যকে চাঙ্গা রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি আর্থিক সহযোগিতায় এ অতিরিক্ত অর্থায়নের সংস্থান হতে পারে। ক্রমহ্রাসমান বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের কারণে স্বাভাবিক ব্যাংকিং ব্যাহত হচ্ছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অতিরিক্ত অর্থায়নকে প্রস্তাবিত পূর্ব-অর্থায়ন স্কিমের আওতায় আনা যেতে পারে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এমএসএমই খাতকে সাধারণ ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা যাবে। পাশাপাশি কোম্পানি আইনের আওতায় নিবন্ধিত সীমিত দায়বদ্ধ কোম্পানিসমূহকে ব্যাংক গ্যারান্টির শর্তকে আগামী ছয় মাসের জন্য শীথিল করতে ডিসিসিআই আহ্বান জানাচ্ছে।’