আই-ট্রিপল-ই বাংলাদেশ সেকশন, বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহযোগিতায় ভার্চুয়ালি এটি অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটিতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন সমস্যার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সমাধানের ওপর আলোকপাত করা হয়। এতে প্রায় ২০টি দেশের ২০০ এর বেশি গবেষক অংশগ্রহণ করেছেন।
এবারের সম্মেলনের বিষয় ছিল বিজ্ঞান ও সমসাময়িক প্রযুক্তি। যা কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রি ৪ দশমিক ০ অ্যাপলিকেশন্স, বিজনেস ইনফরমেটিক্স, রোবোটিক্স অ্যান্ড সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেমস এবং রিনিউয়েবল এনার্জিকে অন্তর্ভুক্ত করে।
শনিবার (৭ আগস্ট) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে আমাদের আরও উদ্ভাবন এবং নতুন ধারণার প্রয়োজন। আমরা আশা করি, গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা আন্তরিকভাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি এবং সাধারণভাবে মানব সভ্যতার উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য সব সেক্টরে ডিজিটাইজেশন আবশ্যক। আমাদের আশা, সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ও সময়ের চাহিদা মেটাতে হাজার হাজার উদ্ভাবনী পণ্য তৈরি করতে পারবে বাংলাদেশের মেধাবীরা। আমাদের পরিকল্পনা, আইটি শিল্পের ওপর ভিত্তি করে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি এবং ২০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিইউবিটির মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আমাদের অগ্রযাত্রার সঙ্গী। এ ধরনের সম্মেলন নতুন ধারণা এবং উদ্ভাবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য-প্রযুক্তির জ্ঞান দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। জেনে খুশি হবেন, উচ্চতর দক্ষ আইটি ফ্রিল্যান্সাররা প্রতি ঘণ্টায় আয় ওয়েব প্রোগ্রামিং-এর জন্য ৯ ডলার এবং আরও উন্নত কাজের জন্য ৪০ ডলার করে আয় করতে পারে।’
‘করোনা মহামারিতেও আমরা ব্যবসা, শিক্ষা এবং অন্যান্য সব খাতে একটি বড় দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই জটিল পরিস্থিতি আমাদের নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখিয়েছে।’- যোগ করেন পলক।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, কনফারেন্সের আয়োজক, গবেষক, প্রবন্ধ উপস্থাপক, মূল বক্তা এবং সেশন চেয়ার হিসেবে নিযুক্তরা ব্যাপক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। এই অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে আরও উন্নয়নের জন্য জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। আমি খুবই আনন্দিত যে আপনারা সবাই কনফারেন্সটিকে একটি দুর্দান্ত সাফল্য এনে দিয়েছেন। দেশের উন্নয়নকে শক্তিশালী করতে আপনারা নিজেদের গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন বলে আমি আশাবাদী।’
কনফারেন্সে প্রফেসর ড. সফিক আহম্মেদ সিদ্দিক, প্রধান পৃষ্ঠপোষক, আইসিএসসিটি এবং চেয়ারম্যান, বিইউবিটি ট্রাস্ট যুক্ত ছিলেন।
বিইউবিটির জেনারেল চেয়ার, আইসিএসসিটি ও ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফৈয়াজ খান বলেন, ‘আমরা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সব প্রযুক্তিগত সেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। ভার্চুয়াল মোডে সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং গবেষণা প্রবন্ধ পেশ করার জন্য আমি গবেষকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। আশা করি এসব গবেষণা প্রবন্ধ ভবিষ্যতে বাস্তব প্রকল্পে সাদরে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্য হবে।’
সমপানী অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন ড. আহমেদ সাবের, টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম চেয়ার, আইসিএসসিটি। তার দেওয়া তথ্য মতে, প্রায় ২০টি দেশ থেকে ৩৩৪টি গবেষণা প্রবন্ধ গ্রহণ করা হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধগুলো পিয়ার রিভিউ করে মাত্র ১২৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপনার জন্য এবং পরবর্তীতে আই-ট্রিপল-ই ডিজিটাল লাইব্রেরিতে আপলোড করতে নির্বাচন করা হয়।
এ সময় প্রফেসর ড. আলী আহমেদ, ম্যানেজমেন্ট চেয়ার, আইসিএসসিটি এবং ডিন, ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপলায়েড সাইন্সেস, বিইউবিটি ভোট অব থ্যাংকস প্রদান করেন।
প্রফেসর ড. মো. আলী নূর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, বিইউবিটি, ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, রেজিস্ট্রার, বিইউবিটি (সেশন কো-অর্ডিনেটর হিসেবে), বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, অধ্যাপক, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও বিইউবিটি’র শিক্ষক-কর্মকর্তারা কনফারেন্সের সমাপনী অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।