গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ কোটি ৫৪২ কোটি টাকা।
আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৯ কোটি ৯২২ কোটি টাকা। সে হিসেবে টানা দুই সপ্তাহের উত্থানে বাজার মূলধন বাড়ল ১৩ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ডিএসইর বাজার মূলধন এযাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।
বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৮টির। আর ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের পাঁচ সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছিল ৪৪৬ পয়েন্ট। এ হিসেবে টানা ছয় সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইএক্স বাড়ল সাড়ে ৫’শ পয়েন্ট।
ছয় সপ্তাহের এই টানা উত্থানের কারণে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থাতে পৌঁছে গেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স। মূল্য সূচকের ভুল গণনা বন্ধ করতে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি নতুন সূচক ডিএসইএক্স চালু করে ডিএসই। ৪০৫৫ দশমিক ৯০ পয়েন্ট দিয়ে শুরু হওয়া সূচকটি এখন ৬ হাজার ৬৯৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট অবস্থান করছে।
প্রধান মূল্য সূচক নতুন উচ্চতায় পৌঁছানের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকও এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ৪১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের পাঁচ সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭৭ দশমিক ৫১ পয়েন্ট।
অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ১৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের পাঁচ সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১০৫ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৬৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ২ হাজার ৩৩৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৩২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ১৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৭ হাজার ১৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৩ হাজার ৬৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা ৫১ দশমিক ৯০ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে শেয়ারবাজারে তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহের ডিএসইতে টাকার অংকে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৭৯ কোটি ৬৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৬ লাখ ৯১ হাজার টাকা। ২১৯ কোটি ২২ লাখ ৩১ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, মালেক স্পিনিং, জিপিএইচ ইস্পাত, অ্যাপোলো ইস্পাত, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইসলামীক ফাইন্যান্স।