শনিবার (১৪ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের জন্য বার-বার কারা বরণ করেছেন। তিনি বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ভাবতেন দেশকে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায়, কিভাবে সমৃদ্ধ করা যায়।
তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা ঠেকাতে একটা বিপক্ষ শক্তি সব-সময় বঙ্গবন্ধুর পেছনে লেগে থাকতো, তাকে ক্ষতি করার চেষ্টা করতো, কিন্তু তাই হয়েছে… দেশের জন্য শেষ পর্যন্ত তাকে জীবনটাই দিতে হল। পুরো পরিবারকে তারা শেষ করে দিল। তারা জানতো বঙ্গবন্ধু যা বলেন তাই করেন, তিনি বলেছেন দেশকে সোনার বাংলা বানাবেন, উনি সোনার বাংলা ঠিকই বানাবেন। উনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপস করেন না। এবং সে জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা ছাড়া তাদের হাতে আর কোনো উপায় ছিল না। উনার কাছের লোক, দেশ বিরোধী বিভিন্ন বিপদগামী লোক তাকে হত্যা করে দেশকে আজ এতো বছর পিছিয়ে দিয়েছে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দায়িত্ব, কর্তব্য ও দূরদর্শিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের আজকের উন্নয়নের পেছনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও রাজনৈতিক দর্শন এবং তা বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, একজন মানুষ কতটা সাহসী ও বিশাল হৃদয়ের অধিকারী হতে পারেন বঙ্গবন্ধু তা বিশ্বকে দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের আজকের এ অর্জন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আরও অনেক আগেই অর্জিত হতো। এমন মহান নেতার মৃত্যু জাতিকে বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে, কারো হুংকার বা হুমকিতে পিছপা হবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো, তাই আমাদেরকে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সবাইকে এক থাকতে হবে, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে একসাথে কাজ করতে হবে।’
পুঁজিবাজারের বর্তমান উন্নতি কারও একক অবদান নয় বরং সকলের সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পুঁজিবাজারের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা থাইল্যান্ড ও কোরিয়ার সমান ছিল এখন তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে তবে আমরা শিগগিরই তাদেরকে ধরে ফেলব।
দেশের অর্থনীতির অর্জনকে প্রচার করার জন্যই আমরা ‘ইউ এস ট্রেড শো, রোড শো ইত্যাদি’ করছি। আমাদেরকে আমাদের অর্জনগুলো প্রচার করতে হবে যাতে সবাই বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। দেশে বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে তারা পুঁজিবাজারে আসবে এতে পুঁজিবাজারের লাভ হবে। তাই সবাইকে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে।
পৃথিবীর জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ উপমহাদেশের থেকে অর্জিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এই মাটি সোনার মাটি, এখানে প্রাকৃতিক এবং খনিজ সম্পদে ভরপুর। এখানে সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো মানবসম্পদ।
এ সময় সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনকে (বিএমবিএ) ধন্যবাদ জানান তিনি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল ইসলাম, এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।