বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর দিবসটির আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত প্রতিপাদ্য ‘লিটারেসি ফর হিউম্যান-সেন্টার্ড রিকভারি: ন্যারোয়িং দ্যা ডিজিটাল ডিভাইড’।
তিনি বলেন, জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন জরুরি। বিশেষভাবে, নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনশীল কাজে সম্পৃক্ত করে ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়। স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সরকার কর্তৃক প্রণীত প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতে (১৯৭৩-১৯৭৮) উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তাদের ভূমিকা সম্বন্ধে সচেতন করার লক্ষ্যে কার্যকরী সাক্ষরতা (functional literacy) কর্মসূচি গ্রহণের সুপারিশ করা হয় এবং তা বাস্তবায়নের জন্য বয়স্ক ও গণশিক্ষাসহ উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখা হয়।
প্রধানমন্ত্রী জানান, স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও যারা কখনো স্কুলে পড়াশোনা করেনি এমন আট থেকে ১৪ বছর বয়সী ১০ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে পাঠদান সম্প্রচার করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পৃক্ত রাখা হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, বর্তমান সরকার উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। এ আইনের আওতায় জীবন ও জীবিকায়ন দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, উপ-আনুষ্ঠানিক ধারায় বৃত্তিমূলক, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানমূলক প্রশিক্ষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতে (২০২১-২০২৫) জীবনব্যাপী শিক্ষার বৈশ্বিক ধারণার দিকে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে সব নিরক্ষরকে মৌলিক সাক্ষরতা জ্ঞান দেওয়ার কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কৌশল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আইসিটি বেইজড জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভীষ্ট ৪-এ জীবনব্যাপী শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ। আমি আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।