বৈঠকে সালমান এফ রহমান বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণেরও প্রস্তাব দেন। সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী বাংলাদেশের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। এ সময় সালমান এফ রহমান সরকারি –বেসরকারি অংশীদারত্বে সৌদি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টিতে খসড়া সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আরও বলেন, সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশের অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে সৌদি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে।
এ সময় সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী জানান, সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং তা দ্রুত স্বাক্ষর হবে। সৌদি মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাতভিত্তিক বিনিয়োগের বিষয়ে সহযোগিতা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সালমান এফ রহমান দুদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিনিধিদল বিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরে সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রীকে আগামী ২৮ ও ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের অনুরোধ জানান।
এর আগে গত রোববার সালমান এফ রহমান সৌদি আরবের পরিবহনমন্ত্রী সালেহ আল জাসের সঙ্গেও বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে সৌদি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের পরিবহন খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা যেতে পারে। এ সময় সৌদি পরিবহনমন্ত্রী তাঁর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান রোববার রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে সরকারি সফরের মাধ্যমে সৌদি–বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা–বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। তা আরও বাড়ানোর ওপর তিনি জোর দেন। উপদেষ্টা দুই দেশের চেম্বার নেতাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সফর ও বৈঠকের ওপর গুরুত্ব দেন। পাশাপাশি দুই দেশের চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে ২০০৫ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকটি সংশোধন করে যুগোপযোগী করার প্রস্তাব দিলে সৌদি ফেডারেশন অব চেম্বার তাঁদের আগ্রহ প্রকাশ করে।
এসব বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সৌদি আরব সফররত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ও বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) সুলতানা আফরোজ প্রমুখ।