বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উক্ত টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান এনডিসি, রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন, ট্যানারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়/দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, চামড়াশিল্প খাত একটি বৃহৎ শিল্প। চামড়া রপ্তানির জন্য বিদেশে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। চামড়া ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এজন্য সরকার সব রকমের সহযোগিতা করবে।
সভায় ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সাভারের চামড়াশিল্প নগরী বন্ধের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ট্যানারি কারখানাসমূহ হাজারীবাগ থেকে নির্মাণাধীন অসম্পন্ন চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা হলেও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি) এবং অন্যান্য উপাদানের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ অবস্থায় কয়েকটি ট্যানারির অনুকূলে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করা হলেও এখন পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়নে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। আর পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়নপ্রাপ্তি বিলম্বিত হওয়ায় রপ্তানিকারক হিসেবে এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ইআরসি, আমদানিকারক হিসেবে ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আইআরসি ও শুল্কমুক্তভাবে পণ্য আমদানির বন্ড সুবিধার ছাড়পত্র পেতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন, আমরা ট্যানারি শিল্পনগরী বন্ধ করার পক্ষে নই। আমাদের কাঁচামাল আছে, জনশক্তি আছে, অভিজ্ঞতা আছে। কাজেই শিল্পনগরীর চামড়া কারখানাসমূহের সুষ্ঠু উৎপাদন কার্যক্রমের স্বার্থে পরিবেশগত ছাড়পত্রের নবায়ন ত্বরান্বিতকরণ, সিইটিপি, কার্যকর করা, আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ করার পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে।
সভায় ভার্চুয়ালী সংযুক্ত হয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমরা চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ করছি।
পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, সাভারে ২৫ হাজার ঘনমিটার তরলবর্জ্য শোধনের ক্ষমতা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ঘনমিটার তরলবর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে। আমাদের যৌথভাবে সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সভায় কোরবানির ঈদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে, প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা যথাযথ মূল্য কেন পাননি, যার জন্য তারা মাথায় হাত দিয়ে বসে গেছে এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খোঁজ নেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, চামড়ার মূল্য এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাজার ধরার জন্য দুই মন্ত্রণালয়ের টানাটানি না করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একক সিদ্ধান্ত থাকা প্রয়োজন।
এসময় শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা কেন্দ্রীয়ভাবে চামড়া মজুদ ও সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বারোপ করেন।