দেশে করোনা সংক্রমণ হওয়ার পর সবকিছু বন্ধ থাকায় গত বছরের এপ্রিল, মে রাজস্ব আদায় হয়নি বললেই চলে। জুন মাসেও তেমন রাজস্ব আদায় হয়নি। গত বছরের জুলাই মাস থেকে রাজস্ব আদায় স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আর চলতি অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে করোনার আগের সময়ের ধারায় ফিরে আসে এনবিআর।
এ বছরের জুলাই মাসে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। আর আগস্ট মাসে ১৯ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা আদায় করেন শুল্ক-কর কর্মকর্তারা। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে আদায় হয়েছিল ১৫ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে রাজস্ব আদায় হয় ৩৪ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বেশি।
এছাড়া জুলাই-আগস্ট মাসে ঋণপত্র খোলার হার প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এই ঋণপত্রের বিপরীতে আমদানি পণ্য আসতে শুরু করে। ফলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক আদায়ও বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র গণমাধ্যমে জানায়, জুলাই-আগস্ট মাসে আমদানি পর্যায়ে আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি।
করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার পর গত আগস্ট মাসে করোনাসংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা হয়। জুলাই-আগস্ট মাসে স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্কসহ অন্যান্য শুল্ক-কর আদায় হয় ১২ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা—আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয় ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ। অন্যদিকে জুলাই-আগস্ট মাসে ১০ হাজার ৩ কোটি টাকা আয়কর আদায় হয়েছে। আয়করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে (২০২১-২০) এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বিশাল লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। গতবারও একই লক্ষ্যে দেওয়া হয়েছিল, পরে তা কমিয়ে ৩ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা করা হয়। শেষ পর্যন্ত এনবিআর প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা আদায় করে।
চলমান করোনা সংকটের মধ্যে বড় করদাতারা মোট রাজস্বের প্রায় ৩০ শতাংশ দিয়েছেন।