নিরাপদ সড়কের জন্য সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ‘নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘ধারাবাহিকভাবে তিনবারের ক্ষমতাসীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী নানা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলেও ৩য় মেয়াদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গাফিলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে’’।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসেবে দেখা গেছে, বিগত ২০১৫ সালে ৬৫৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮৬৪২ জন নিহত এবং ২১৮৫৫ জন আহত হয়েছে। ২০১৬ সালে ৪৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০৫৫ জন নিহত ও ১৫৯১৪ জন আহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ৪৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৩৯৭ জন নিহত, ১৬১৯৩ জন আহত হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০১৮ সালে ৫৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭২২১ জন নিহত ও ১৫৪৬৬ জন আহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৫৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৮৫৫ জন নিহত, ১৩৩৩০ জন আহত হয়েছে।
এদিকে গত বছর করোনা সংক্রমণে বছরব্যাপী লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকা অবস্থায় ৪৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৬৮৬ জন নিহত ও ৮৬০০ জন আহত হয়েছে। সব মিলিয়ে বিগত ৬ বছরে ৩১৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৮৫৬ জন নিহত এবং ৯১৩৫৮ জন আহত হয়েছে।
মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘২০১১ সাল থেকে ২০২১ সালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক ঘোষণা করে সদস্য দেশগুলোর সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার জাতিসংঘে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অঙ্গীকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে’’।
বিবৃতিতে তিনি আরো যেসব দাবির কথা বলেন তা হলো, সড়ক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচীর বাজেট বাড়ানো; গবেষণা, সভা-সেমিনার, প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা; নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা; দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত চালকের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রভৃতি। সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরে এসব সংস্থাসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।