এক বছরে ব্যাংকগুলোয় খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৬৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ খেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ১৬৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা, যা জুনে ৯৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। গত বছরের জুনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৬৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ খেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ১৬৮ কোটি টাকা। মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ছয় ব্যাংকে ৪৪ হাজার ১৬ কোটি টাকা, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোয় ৫০ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা, বিশেষায়িত তিন ব্যাংকে ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা ও বিদেশি ব্যাংকগুলোতে ২ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকাই ছিল খেলাপি। সেই হিসাবে ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ খেলাপি ছিল, যা গত জুনে বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলছেন, ব্যাংক খাতে যেভাবে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল, সেভাবে তা বাড়েনি। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধে একরকম ছাড় দিয়ে রেখেছে। ফলে ঋণ শোধ না করেও অনেকে খেলাপির নাম ও খেলাপ হওয়া ঋণের তথ্য তালিকায় যুক্ত হয়নি।
করোনাভাইরাসের কারণে পুরো ২০২০ সাল জুড়ে ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নীতি-সুবিধা দেওয়ার ফলে ওই সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করেও কেউ খেলাপি হননি। এখন এই বিশেষ সুবিধা বহাল না রাখলেও ঋণ পরিশোধে কিছুটা ছাড় দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০১৯ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে একটি রিপোর্টে বলেছিল, এ দেশে খেলাপি ঋণ আড়াল করে রাখা আছে। এখানে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ করা হয়, প্রকৃত খেলাপি ঋণ তার তুলনায় অনেক বেশি। আইএমএফের মতে, বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হবে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা।