মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের শক্তির ওপর ভর করেই দেশ পরিচালনা করেছে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেছে। সুতরাং বিদেশে প্রোপাগান্ডা করে দেশের ভাবমূর্তি যে ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে, সেটির বিরুদ্ধে অবশ্যই সরকারের বিভিন্ন ম্যাকানিজম কাজ করছে। পররাষ্ট্র দপ্তরসহ সরকারের অন্যান্য ম্যাকানিজমগুলো কাজ করছে।
দেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাতে লবিস্ট নিয়োগের দালিলিক প্রমাণ সাপেক্ষে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না- এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন, আমি মনে করি, তারা যে কাজটি করছে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। অর্থ ব্যয় করে দেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানো। যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক দল, এক্ষেত্রে প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। একই সঙ্গে যে ব্যক্তি বিশেষ এখানে অর্থায়ন করছে, সেখানে আমি মনে করি তারা কোথা থেকে এই টাকা পেলো, কীভাবে টাকা ব্যয় হলো, এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন নেই। সুতরাং এখানে দুদকেরও দায়িত্ব রয়েছে। আর ট্যাক্স অফিসও অবশ্যই এটির খোঁজ নিতে পারে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বহুদিন ধরে বলে আসছি, বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন আছে। প্রকৃত পক্ষে বিএনপি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি রুখে দেওয়ার জন্য, দেশের রপ্তানি-বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বিএনপি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ডিভিশন (এনএসডি) হলো বিচার বিভাগের একটি দপ্তর। এই দপ্তরের কাজ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আর এই দপ্তরের অধিক্ষেত্রাধীন আইন হলো ফরেন এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট। এ আইনের অধীনে ২০১৫ সালে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সব বানোয়াট তথ্য দাখিল করে।
হাছান মাহমুদ বলেন, সেখানে বিএনপি এই ফার্মের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়, যেটি শাহরিয়ার আলম কাল জানিয়েছেন। অ্যাডভান্স হিসেবে দেড় লাখ ডলার প্রদান করে। নয়াপল্টন তাদের দলীয় কার্যালয়ের ঠিকানা দিয়ে চুক্তিটা হয়েছে। প্রতিমাসে ৫০ হাজার ডলার তারা এই ফার্মকে পে করেছে। অর্থাৎ প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার তিন বছরে তারা পে করেছে। তারা যেহেতু চুক্তি করেছে এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
বিভিন্ন নামে বিএনপি ১২টিরও বেশি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার তারা এ ক্ষেত্রে ব্যয় করছে। অর্থাৎ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য তারা প্রতিষ্ঠান হিসেবে লবিস্ট নিয়োগ করে এ কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক দল হয়েও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং তার দালিলিক প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। তাদের কি দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে? তারা প্রকৃত পক্ষে জনগণের ওপর বিশ্বাস করে না। তারা মনে করছে, এই ধরনের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে কেউ তাদের কোলে করে এনে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এদেশে ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণ যাদের মনে করবে তাদের ক্ষমতায় বসাবে।