এর আগে, ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
প্যাকেজগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্যাকেজ-১ : ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের জন্য ৩০ হাজার কোটি ঋণ সুবিধা, প্যাকেজ-২ : ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদান, প্যাকেজ-৩ : বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) সুবিধা বাড়ানো এবং প্যাকেজ-৪ : প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রি-ফাইন্যান্স স্কিম নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন তহবিল চালু করবে, যেখান থেকে ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে।
এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রথমে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব উৎস থেকে বিতরণের জন্য বলা হয়। এই তহবিল থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। যার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে, বাকি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে। তবে এখন উভয়ক্ষেত্রে তহবিলের আকারের অর্ধেক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুনঃঅর্থায়ন হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের বিষয়ে ইতিপূর্বে সার্কুলার জারি করা হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি মূলধন ঋণ দেবে।
উক্ত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের তারল্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নিজস্ব উৎস থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে। এ স্কিম থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণের ৫০ শতাংশ অর্থ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেয়া হবে। এ স্কিমের মেয়াদ হবে তিন বছর। সুদহার ৪ শতাংশ।
এ তহবিল থেকে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিতরণকৃত ঋণের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন পাবে। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের অর্থ পেতে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি করতে হবে। তহবিলের অর্থ একবছর পর থেকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর) সুদসহ পরিশোধ করতে হবে।
এখান থেকে ঋণ নিয়ে কোনোভাবে অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করলে বিদ্যমান সুদেও অতিরিক্ত ২ শতাংশহারে সুদসহ অর্থ ফেরত দিতে হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ বা আদায়ের সব দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর ন্যস্ত থাকবে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।