অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইএসডিবি) প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম এইচ হাজ্জার সঙ্গে করোনার প্রভাবে মানবজাতি ও অর্থনীতির ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে আজ টেলিকনফারেন্সে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আইএসডিবি সদস্য দেশগুলোর জন্য কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে কৌশলগত প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার জন্য আইএসডিবির প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রেসিডেন্টের গতিশীল নেতৃত্ব ও ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আইএসডিবির এ পদক্ষেপ সদস্য দেশগুলোর মানুষ ও অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ আইএসডিবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৭৪ সাল থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বস্ত অংশীদার। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আইএসডিবির সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ঢাকায় আঞ্চলিক কেন্দ্র চালু করে। আইএসডিবির আঞ্চলিক হাবের উপস্থিতিতে আঞ্চলিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে মন্ত্রী আন্তরিকভাবে আশা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন খাতে আইএসডিবির সহায়তায় মোট ১১টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের হার সন্তোষজনক।
অর্থমন্ত্রী ও আইএসডিবি প্রেসিডেন্টের মধ্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউন ও গণছুটির কারণে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ১১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপির ৩.৫ শতাংশ।’
‘এই প্যাকেজের অর্থ জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষার জাল প্রশস্ত করা এবং আর্থিক সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, পরিষেবা খাত এবং কুটির শিল্পগুলো সুরক্ষার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যনির্বাহী মূলধনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থসংস্থান আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি মানুষের জন্য খাদ্য ৎনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্প আয়ের মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।’
আইএসডিবি প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত সময়োপযোগী আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য তার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান। বলেন, ‘আপনার মাধ্যমে আমি আশ্বস্ত করতে চাই যে, আইএসডিবি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সাথে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
অর্থমন্ত্রী তিনটি ক্ষেত্রে আইএসডিবির সহায়তা কামনা করেন। এগুলো হলো- ১. খাদ্যনিরাপত্তা, ২. চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা এবং ৩. কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যান্ত্রিকীকরণ।
আইএসডিবির প্রেসিডেন্ট এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আইএসডিবি টিম বাংলাদেশের সাথে বসে অর্থায়ন ও টাইমলাইন আলোচনার মাধ্যমে সহায়তার বিষয়গুলো ঠিক করে নেবে।