শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের একটি হোটেলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত সি-উইডজাত পণ্য উৎপাদন ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সমুদ্রসম্পদ সি-উইড অপ্রচলিত হলেও এর বহু গুণাগুণ রয়েছে। ওষুধ-প্রসাধনী ও ভেষজ সামগ্রী এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার তৈরিসহ সি-উইডের বহুমুখী ব্যবহারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখন সি ফুডের জন্য আলাদা রেস্তোরাঁ তৈরি হয়েছে। সামুদ্রিক মাছের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। প্রচলিত সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের পাশাপাশি সি-উইডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সি-উইডের বহুমুখী ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য হিসেবে এর স্বাদ ও পরিবেশনের বিষয়টি আলাদাভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। সি-উইডজাত খাবারে আমাদের অভ্যস্ততা বাড়াতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে সুনীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে। সমুদ্র এলাকায় আমাদের প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ এবং খনিজ সম্পদ রয়েছে। সমুদ্রসম্পদ আহরণ হবে দেশের উন্নয়নের আরেকটি বিশাল অধ্যায়। সমুদ্রের গভীরের মাছ, সামুদ্রিক শৈবাল, খনিজসম্পদ আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
সি-উইডের পণ্যের সম্প্রসারণে সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ সামনে নিয়ে আসতে হবে। যারা বিপণন ও খাবার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত আছেন, তাদের সি-উইড পণ্য ব্যবহারে মানুষকে অভ্যস্ত করাতে হবে। এক্ষেত্রে সবধরনের প্রতিকূলতা দূর করা হবে। যে খাতকে বিকশিত করা দরকার প্রধানমন্ত্রী সে খাতকেই বিকশিত করেন। সমুদ্রসম্পদ কাজে লাগাতে আমরা যে চাহিদা দেব তিনি তা পূরণ করবেন বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন করেন, সমুদ্রে নির্গত বর্জ্য সমুদ্রের প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই সমুদ্রে বর্জ্য নির্গত হওয়া বন্ধ করা ও বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে সরকারের উদ্যোগ রয়েছে।
পরে বিএফআরআইর সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রে বিভিন্ন সি-উইডজাত পণ্যের স্টল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।
বিএফআরআই গবেষণার মাধ্যমে এরই মধ্যে ২৩ প্রজাতির বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন সি-উইড শনাক্ত করেছে ও ৬ প্রজাতির বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন সি-উইড চাষ করছে।
বিএফআরআইর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআইর প্রকল্প পরিচালক মো. মুহিদুল ইসলাম।
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।