বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘরে বসেই মানুষের কর্মসংস্থান এনআরবিসি ব্যাংকের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। এজন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা নিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে শুধু এনআরবিসি ব্যাংকে চাকরি করছেন প্রায় ৬ হাজার মানুষ। গত ২০১৭ সালে যা ছিল মাত্র ৬১৭ জন। অর্থাৎ মাত্র চার বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটিতে কর্মসংস্থান বেড়েছে ১০ গুণ।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ৯ টি ব্যাংক অনুমোদনের পর দুটি ব্যাংক শুরুতেই নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে বন্ধের উপক্রম হয়। সেই সংকট মুহুর্তে এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিবর্তন করা হয়। এস এম পারভেজ তমাল ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তারিখে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে এনআরবিসি ব্যাংক এখন অন্যান্য ব্যাংকগুলোর কাছে সাফল্যের অনুকরণীয় মাইলফলক।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এনআরবিসি ব্যাংকই প্রথম যে ১২ বছর পর পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয়ে অন্য ব্যাংকগুলোকে পথ দেখিয়েছে। উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা অনুসারে সঠিকভাবে ব্যাংকটির পরিচালনা করছেন ব্যাংকটির এমডি গোলাম আউলিয়া।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে ব্যাংকের ব্যালেন্সশিটের আকার ছিল ৭ হাজার ৪১২ কোটি। দ্বিগুন বেড়ে ২০২১ সাল শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৪.২৬ কোটি টাকা। ব্যাংকটি সরকারের কোষাগারে ২০১৭ সালে রাজস্ব দেয় ১১২ কোটি টাকা, যা ২০২১ দিয়েছে ২০২ কোটি টাকা।
বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষকে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। বর্তমানে শাখা ও উপশাখা মিলে ব্যাংকের সেবাকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৫০টি। এরমধ্যে পূর্ণাঙ্গ শাখার সংখ্যা এখন ৯৩টি। ব্যাংকিং সেক্টরে প্রথম ব্যাংক হিসেবে উপশাখাভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবসার প্রবর্তন করেন ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল।
জানা যায়, বর্তমানে ৫৭৬টি এজেন্ট পয়েন্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠিকে বিভিন্ন ধরণের আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এজেন্ট পয়েন্টের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৭৬ জন সেবা নিচ্ছে। এনআরবিসি ব্যাংকের সেবাকেন্দ্রেগুলোতে বর্তমানে কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৫,৯২৬ যার মধ্যে স্থায়ী ২,১০০, চুক্তিভিত্তিক জনবল ১,৬১৯। সিকিউরিটি গার্ড এবং সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যা প্রায় ২,২০৭ জন। এর মধ্যে প্রায় ৩৬% শতাংশই নারী।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, আমরা চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ তার ঘরে বসে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। এজন্য আমরা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছি। গ্রামের কর্মসংস্থান, নতুন উদ্যোক্তা, নারী উদ্যোক্তা, কৃষি উন্নয়ন ঘটিয়ে সরকারের গ্রামকে শহরায়ন কর্মসূচিকে সফল করতে চেষ্টা করছি। গ্রামের মানুষকে সুদের জালে না আটকিয়ে সর্বনিম্ন সুদে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন করতে কাজ করছে এনআরবিসি ব্যাংক।
গ্রামীন অর্থনীতির উন্নয়নের যুগোপযোগী বিশেষ ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প চালু, মাত্র ৯ শতাংশ সুদে গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের ঋণ বিতরণ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের বেকারত্ব দূর করতে নতুন উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণের বিশেষ উদ্যোগ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কমপক্ষে ৫০ হাজার প্রশিক্ষিত তরুণকে স্বল্পসুদে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার কার্যক্রম চালু করেছে।
বিদায়ী ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমান ২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৯ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ ৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির হার ৩৭ শতাংশেরও বেশি। রেমিটেন্স সংগ্রহ ১৮৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১২ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আমদানি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। ২০২১ সালে এই ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানি হয়েছে ৪৯ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য। আর রপ্তানি আয় সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।