দীর্ঘ ৩১ বছর পর বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমটি বাংলার অগ্রগতি’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বন্দরে নোঙর করেছে। জানা গেছে, গত ৫ মার্চ উত্তর আমেরিকার দেশ এল সালভাদর থেকে রওনা হয়ে ২৭ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি।
তিন বছর আগে নির্মিত ৩৮ হাজার ৯২৮ টন বহন ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজটি ৬.৮ মিটার নকশাসহ ১৮৫ মিটার দীর্ঘ ও ২৮ মিটার চওড়া। আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত হিউস্টন বন্দরে থাকার পর ২১ মার্চ নিউ অরলিন্সের বন্দরে পৌঁছাবে ‘এমটি বাংলার অগ্রগতি’। এরপর প্রায় ৩৩ হাজার টন সয়াবিন তেলের একটি চালান নিয়ে নিউ অরলিন্স থেকে ভারতের কান্ডলা বা হলদিয়া বন্দরে যাবে জাহাজটি।
শিল্প সংশ্লিষ্টরাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবারও জাহাজ চলাচলকে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন।
বিএসসির নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্য) পীযূষ দত্ত জানান, মার্কিন বন্দরে প্রবেশের জন্য জাহাজটি বিশ্বমানের হতে হবে। সেখানে অনেক পরিদর্শক আছে। বিএসসির জাহাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক গুণমান বর্তমানে খুব ভালো। বিশ্বের যেকোনো শীর্ষমানের বন্দরে প্রবেশের জন্য জাহাজগুলো সব ধরনের সুযোগ-সুবিধায় সজ্জিত।
উল্লেখ্য, ১৯৭৭ সালে “বাংলার মান” জাহাজের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহন শুরু হয়।
এরপর, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) “এমভি বাংলা মমতা” নামের একটি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের একটি বন্দরে পৌঁছালে জাহাজের ১৪ জন নাবিক গোপনে ও অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে, তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় কর্তৃপক্ষ একজন প্রধান প্রকৌশলীকে পাঠালে তিনিও নিখোঁজ হয়ে যান।
জাহাজটি দেশে ফিরিয়ে আনা হলেও ৩১ বছর আগের এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিএসসিরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। সেই সময়ে শতাধিক বাংলাদেশি জাহাজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায় এবং বিএসসি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে। এ ঘটনার পর গত ৩১ বছরে বাংলাদেশের পতাকাবাহী কোনো জাহাজ আর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বন্দরে যায়নি।