বৈঠক শেষে ঘোষণা করা হবে হজ প্যাকেজ। তখন জানা যাবে এবার হজে যেতে কত খরচ পড়বে হজযাত্রীদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৪৫২ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হজযাত্রীদের নিবন্ধনও আছে।
অন্যদিকে হজে যাওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। আগামী ৩১ মে প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে যাবে সৌদি আরবের উদ্দেশে। এ ছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া যাত্রীদের জন্য হজ গাইড প্যানেল তৈরির কার্যক্রমও প্রায় চূড়ান্ত। এ জন্য জেলা হজ গাইড প্যানেল তৈরি কমিটি কাজ করে যাচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ১৬ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে যেসব হজ এজেন্সি ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হজে হজযাত্রী পাঠাতে ইচ্ছুক সেসব হজ এজেন্সিকে গত ২৬ এপ্রিলের মধ্যে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার জন্য বলা হয়েছিল। এতে সহস্রাধিক আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদন থেকে ৭০০টি হজ এজেন্সিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেক এজেন্সিকে সর্বনিম্ন ১০০ জন হাজযাত্রীর ব্যবস্থা করতে হবে। যে এজেন্সি ১০০ জন যাত্রী সংগ্রহ করতে পারবে না তাদের অন্য কোনো এজেন্সির পক্ষে কাজ করতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের ধারণা ৩০০-এর বেশি এজেন্সি ১০০ জন করে হাজি সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যরা হয়তো কেউ ১০ জন, ২০ জন বা ৫০ জন সংগ্রহ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে যেসব এজেন্সি ১০০ জন পূরণ করেছে তাদের সহযোগিতা করবে কম সংগ্রহকারী এজেন্সিগুলো। ’
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী ৩১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট সৌদি আরবে যাবে। সে বিষয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনা ও রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবস্থাপনায় এবার হজে যেতে পারবেন ৫৭ হাজার ৫৫৬ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে চার হাজার জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে পারছেন। বাকিদের নেবে রিক্রুটিং এজেন্সি। সৌদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ৬৫ বছরের বেশি
বয়সী কেউ এবার হজ করতে পারবেন না। তবে বয়সের সীমা পেরোনো এমন কোনো নিবন্ধিত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য তাঁর পরিবর্তে হজে যেতে পারবেন। এমন শূন্য কোটায় হজে যেতে হলে প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করে ১০ মের মধ্যে ঢাকার আশকোনার হজ অফিসে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে অনেকে আবেদন করেছেন। আবার অনেকে অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আবেদনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
আশকোনার হজ অফিস সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৬০১ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫১ হাজার ৮৫১ জন নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত হজযাত্রীরাও রয়েছেন।
অন্যদিকে ১১ বছর পর হজযাত্রী পরিবহনে বিমান ও সাউদিয়া এয়ারলাইনস ছাড়াও সৌদি সরকার ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসকে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসকে হজযাত্রী পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে।
হজ সামনে রেখে হজে গমন ইচ্ছুক ও হজসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় গত ২৯ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এসব পরামর্শের মধ্যে রয়েছে—২০২০ সালে সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রী ১৪৪৩ হিজরি সনে হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের নিবন্ধিত সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা ২০২২ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণার তিন কার্যদিবসের মধ্যে যেকোনো নিবন্ধন কেন্দ্র থেকে প্যাকেজ স্থানান্তর সম্পন্ন করবেন। এত আরো বলা হয়, কভিডের টিকা ও টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করে টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট হজের পুরো সফরে ব্যবহারের লক্ষ্যে একাধিক কপি বা আইডি কার্ড আকারে লেমিনেটেড কপি প্রস্তুত রাখতে হবে।