২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রথমবার চেয়ারম্যান হন। প্রবাসী এই সফল উদ্যোক্তার দায়িত্ব নেওয়ার পর সাফল্যের ধারা বজায় রেখেই এগিয়ে চলছে চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবিসি ব্যাংক। ব্যাংকটির লক্ষ্য ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। ঘরে বসেই মানুষের কর্মসংস্থান এনআরবিসি ব্যাংকের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। এজন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা নিয়ে যাচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে শুধু এনআরবিসি ব্যাংকের চাকরি করছেন প্রায় ৬ হাজার মানুষ। গত ২০১৭ সালে যা ছিল মাত্র ৬১৭ জন। অর্থাৎ মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটিতে কর্মসংস্থান বেড়েছে ১০ গুণ। এছাড়া অর্থায়নের মাধ্যমে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আর্থিক সূচকগুলোতেও অগ্রগতি হয়েছে। ব্যাংকটির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
উন্নয়নমুখী ও মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মাত্র ৪ বছরে এনআরবিসি ব্যাংক গ্রাহকের আস্থা ও সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের ঐকমত এবং উন্নয়নমূখী নীতি পরিকল্পনায়। যেসব উন্নয়নমুখী নীতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এনআরবিসি ব্যাংক পরিবার সরকারের উন্নয়ননীতির সঙ্গে একাত্ব হয়ে দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে। ব্যাংকের সকল পরিচালকরা আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। এনআরবিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তারা সবাই প্রবাসী।
২০১৭ সালে ব্যাংকের ব্যালেন্সশিটের আকার ছিল ৭ হাজার ৪১২ কোটি। দ্বিগুণ বেড়ে ২০২১ সাল শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৪.২৬ কোটি টাকা। ব্যাংকটি সরকারের কোষাগারে ২০১৭ সালে রাজস্ব দেয় ১১২ কোটি টাকা, যা ২০২১ দিয়েছে ২০২ কোটি টাকা।
বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক নির্দেশ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পের সাথে যুক্ত রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। এছাড়া, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্কভাতা, বিধবাভাতাসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে এনআরবিসি ব্যাংক।
বর্তমান চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষকে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে।
বর্তমানে শাখা ও উপশাখা মিলে ব্যাংকের সেবাকেন্দ্রের সংখ্যা ১০০০টি। এরমধ্যে পূর্ণাঙ্গ শাখার সংখ্যা এখন ৯৩টি। ব্যাংকিং সেক্টরে প্রথম ব্যাংক হিসেবে উপশাখাভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল। এছাড়া, বর্তমানে সরকারের রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এনআরবিসি ব্যাংক বিআরটিএর ফি আদায়ের পাশাপাশি জমি রেজিস্ট্রেশনের ফিও আদায় করছে। এছাড়া, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক (ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন) কার্যক্রমে সাফল্য দেখিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।
ক্ষুদ্র ঋণ চালু করে ২৬ হাজার গ্রাহককে এই ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তারা ঋণ পেয়েছেন সর্বমোট ১০০০ কোটি টাকা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কমপক্ষে ৫০ হাজার প্রশিক্ষিত তরুণকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় যুবকদের ৪ থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে।
মানুষের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে সেবাকার্যক্রম পরিচালনা করায় আর্থিক সূচকগুলোতেও এসেছে সাফল্য। বিদায়ী ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমান ২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৯ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ ৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির হার ৩৭ শতাংশেরও বেশি। রেমিটেন্স সংগ্রহ ১৮৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১২ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আমদানি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। ২০২১ সালে এই ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানি হয়েছে ৪৯ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য। আর রফতানি আয় সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।