এই চুক্তির মাধ্যমে, দেশের বাইরে বসবাসকারী এবং কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিদেশ থেকে টেরাপে-এর ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে এবং নিরাপদে রিয়েল-টাইমে তাদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারবেন।
বর্তমানে, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠান বিদেশে বসবাসরত প্রায় ১.৩ কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। বেশিরভাগ বাংলাদেশি অভিবাসীই শ্রমজীবি এবং তারা দেশে পরিবারের কাছে নিয়মিত অর্থ পাঠানোর সুবিধাজনক উপায় খুঁজে পেতে ভোগান্তিতে পড়েন। তাদেরকে উচ্চ রেমিটেন্স খরচ, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ওঠানামা বা একাধিক লেনদেন ফি এর মত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। এই ক্রমবর্ধমান ব্যয়বহুল প্রক্রিয়াটি তাদের বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলের মতো বিকল্প উপায় খুঁজতে বাধ্য করে, যা নিরাপত্তা বা স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা দেয় না। টেরাপে এবং ব্র্যাক ব্যাংক-এর সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন তাদের প্রিয়জনদের নির্বিঘ্নে অর্থ পাঠানোর একটি নিরাপদ, তাৎক্ষণিক এবং সাশ্রয়ী উপায় পাবেন।
এই অংশীদারিত্বটি ব্র্যাক ব্যাংককে ৪.৫ বিলিয়নের বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ১.৫ বিলিয়নের বেশি মোবাইল ওয়ালেটে অর্থপ্রদান সহ বিশ্বব্যাপী টেরাপে-এর সু-প্রতিষ্ঠিত মার্চেন্ট পার্টনার নেটওয়ার্কের (রেগুলেটরি কভারেজ সহ) সুবিধা নিতে সাহায্য করবে। উপরন্তু, টেরাপে ব্র্যাক ব্যাংকের ১৩ লাখের বেশি গ্রাহকের সাথে যুক্ত হবার সুযোগ পাবে। এছাড়া গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ব্যাংকিং অন ভ্যালুস (জিএবিভি), এর নেটওয়ার্কের সুবিধা নিতে পারবে। ব্র্যাক ব্যাংক জিএবিভি’র সদস্য, যে ফোরামটির আছে ৬৮টি সদস্য এবং ৬০ মিলিয়নের বেশি গ্রাহক। সকলের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ইকোসিস্টেম তৈরি করে একটি ক্যাশলেস সমাজকে বাস্তবায়িত করার সম্মিলিত লক্ষ্য এই অংশীদারিত্বকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এটি টেরাপে’র নিরাপদ অর্থপ্রদান প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য, বৈশ্বিক আর্থিক আন্তঃঅপারেবিলিটি এবং অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ব্র্যাক ব্যাংকের সমৃদ্ধ এবং বিস্তৃত ইকোসিস্টেমের মার্চেন্ট, কর্পোরেট এবং এসএমই-এর জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে, ব্র্যাক ব্যাংক-এর গ্রাহক অ্যাকাউন্টে রিয়েল-টাইম অটোমেটেড ডিপোজিট নিশ্চিত করে টেরাপে। একই সাথে, গ্রাহকরা সরাসরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ওয়ালেট বিকাশ-এ রেমিট্যান্স জমা দিতে পারবেন। বিকাশ ব্র্যাক ব্যাংক-এর একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ সরকার বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করছে। এজন্য সরকার রেমিট্যান্স গ্রহীতাদের ২.৫% প্রণোদনা প্রদান করে। ব্র্যাক ব্যাংক-এর ‘আস্থা’ অ্যাপ ব্যবহার করে অ্যাকাউন্টে জমাকৃত রেমিট্যান্সের অর্থ দিয়ে গ্রাহকরা ইউটিলিটি পেমেন্ট, বিমা ও ঋণের কিস্তি, ক্রেডিট কার্ড ও ফোনের বিল পরিশোধসহ দেশের যেকোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ওয়ালেটে টাকা পাঠাতে পারবেন। তারা সারা দেশে যেকোনো এটিএম থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন। এছাড়াও, ৫ কোটির বেশি বিকাশ ব্যবহারকারী সারা বাংলাদেশে ২০০,০০০ এজেন্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন।
এই পার্টনারশিপ সম্পর্কে টেরাপে-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আম্বার সূর বলেন, “টেরাপে’র অত্যাধুনিক ইন্টারঅপারেবিলিটি প্ল্যাটফর্ম অংশীদারদের বিশ্বব্যাপী কোম্পানির ৪.৫ বিলিয়নের বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ১.৫ বিলিয়নের বেশি মোবাইল ওয়ালেটের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হবার সুযোগ এনে দেয়। এর ফলে গ্রাহক বিস্তৃতি আরও বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশ একটি উদীয়মান বাজার, যার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং পেমেন্ট সেগমেন্টও এর ব্যতিক্রম নয়। টেরাপে’র মাধ্যমে, বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি প্রবাসীরা রিয়েল-টাইমে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং দ্রুততার একটি প্লাটফর্ম পাবেন।”
ব্র্যাক ব্যাংক-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, “রেমিট্যান্স আমাদের জন্য একটি অগ্রাধিকারমূলক খাত এবং আমরা এর ক্রমাগত বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্বব্যাপী রিয়েল-টাইম ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানি টেরাপে-এর সাথে আমরা পার্টনারশিপ করেছি, কারণ তারা আমাদের মতো তাদের গ্রাহকদের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করে। এই পার্টনারশিপ প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে অর্থ পাঠাতে সহায়তা করে বিশ্বব্যাপী আমাদের ক্রমবর্ধমান রেমিটেন্স পার্টনারশিপকে বৃদ্ধি করেছে। দেশের যেকোনো প্রান্তে সরাসরি এবং তাৎক্ষণিকভাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছি।”