এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক জানান, করোনা পরিস্থিতিতেও যাতে আম পরিবহন ও বাজারজাত করতে কোনও ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের সে লক্ষ্যে নানা সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমসহ সকল পচনশীল পণ্য পরিবহনের বাধা নেই। সড়কে যাতে অহেতুক হয়রানি না পড়ে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মৌসুম ফল রাজশাহীর আমের চাহিদা রয়েছে সারাদেশেই। এজন্য রাজশাহী থেকে আম পাঠানো ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা চাইলে রেলেও আম পাঠাতে পারবেন। বিআরটিসির ট্রাকেও পরিবহন করা যাবে। পাশাপাশি এসএ পরিবহন ও সুন্দরবনসহ সকল কুরিয়ারে আম পরিবহন অব্যাহত থাকবে।
বুধবার (২০ মে) দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আম সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। সভায় বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস, কৃষি বিভাগ, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে, জেলা ও মহানগর পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অংশ নেন রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকার আম চাষি এবং ব্যবসায়ীরাও।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আম নামানো শুরু হওয়ার পর শুধু আম পরিবহনেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রেন চলবে। এই জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এক কেজি আম দেড় টাকায় ভাড়ায় ঢাকায় নিয়ে যেতে পারবেন। একই ট্রেনে এক টাকা ৩০ পয়সায় আম নিয়ে যাওয়া যাবে রাজশাহী থেকে। ঢাকায় পৌঁছানোর পর ব্যবসায়ীদের সুবিধামতো স্টেশনে ট্রেন থামানো হবে। রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোও সাধ্যমতো কম খরচে ঢাকায় আম নিয়ে যাবে।
রাজশাহী জেলায় আম বাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। অপরিপক্ব আম নামানো ঠেকাতে গেল কয়েক বছরের মতো এবারও আম নামানোর সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী গাছে পাকলেই গত ১৫ মে থেকে সব ধরনের গুটি আম নামানোর সময় শুরু হয়েছে। কিন্তু বুধবার (২০ মে) থেকে শুরু হয়েছে গোপালভোগ নামানোর সময়। কিন্তু চাষিদের গাছে এবার নির্ধারিত সময়ে আম পাকেনি। কেবল আঁটি এসেছে। আরও কিছু দিন সময় লাগবে গাছে আম পরিপক্ক হতে। তাই এখনই আম ভাঙছেন না রাজশাহীর চাষিরা। বাজারেও নেই আম।
প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী, রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪ জাতের আাম।