কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের ধর্মীয় নেতাদের (ইমাম) ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ও তাদেরকে ‘দক্ষ যোগাযোগকারী’ বলে ইউনিসেফ বাংলাদেশের একটি বিশেষ প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার (২০ মে) এ প্রতিবেদনটি ইউনিসেফের (বাংলাদেশের) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। প্রবন্ধের শুরুতেই বলা হয়েছে, স্মার্টফোন ও টেলিভিশন নেই এমন লাখ লাখ বাংলাদেশির কাছে ইমামরা মসজিদের মেগাফোনের মাধ্যমে জীবন রক্ষায় সহায়ক তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন।
এতে বলা হয়, ইমামরা আজান দেওয়ার জন্য ঐতিহ্যগতভাবে মসজিদের মেগাফোন ব্যবহার করেন। তবে, এখন জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত বার্তা প্রচারের কাজেও তারা এটি ব্যবহার করছেন। ইমামদের ‘দক্ষ যোগাযোগকারী’ হিসাবে উল্লেখ করে ইউনিসেফের কমিউনিকেশন ফর ডেভেলাপমেন্ট স্পেশালিস্ট শেখ মাসুদুর রহমান বলেন, মসজিদে খুতবা দেওয়া এবং মসজিদের মেগাফোন ব্যবহার উভয় সময়ই জনগণ তাদের বার্তা শোনেন।
কোভিড-১৯ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইমামদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হলে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কমিউনিটিতে সেগুলো প্রচার করতে পারেন।
মুসলিম প্রধান দেশ হিসাবে বাংলাদেশে ইমামরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কারণ তারা লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। ২০১৭ সাল থেকে ইউনিসেফ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি সংস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (আইএফবি) নারী ও শিশুদের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করছে।
এতে বলা হয়, প্রায় ৫ লাখ ইমাম এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এখন দেশব্যাপী কোভিড-১৯ সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করছেন। সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বাড়িতে লকডাউনে থাকাকালীন কোরআন শরীফ থেকে কিভাবে উপকার পাওয়া যায় এসবসহ স্বাস্থ্যবিধি ও সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্পর্কিত মূল বার্তা প্রচারে তারা সহায়তা করছেন।
মাসুদুর রহমান জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলে দিনে পাঁচ বার আজানের সময় সময় ইমামরা এই মেগাফোন ব্যবহার করেন এবং তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এলাকার জনগণ ইমামদের কথা শোনেন এবং জনগণের কাছে জনগুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রচারের ক্ষেত্রে এই মেগাফোন একটি কার্যকর মাধ্যম।
প্রবন্ধে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ সংক্রমণের মাত্র দুইটি ঘটনার নিশ্চিত খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এতই বেশি যে, সঠিক সতর্কতা ও প্রস্তুতি না থাকলে শরণার্থী শিবিরে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।