গতকালের বিভিন্ন পত্রিকা নিউজ করেছে খোলা বাজারে ডলার ১১৯/১২০/১২১ টাকা। এটা একটা সাধারণ সংবাদ; যা আমি-আপনি খালি চোখে দেখছি তাই পত্রিকা সমূহ লিখছে? এসব সংবাদে ঘটনা আছে কিন্তু অনুসন্ধানী তত্ত্ব বা তথ্য নেই। এই সব সাধারণ সংবাদ কিন্তু বাজারকে আরও উস্কে দেয়। আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি কিছু ব্যাংক, কিছু মানি এক্সচেন্জ এবং কিছু ব্যক্তি বিশেষ ডলার কিনে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী করে দাম বাড়াচ্ছে।
অনেকে শেয়ার বিক্রি করে ডলার বাজারের জুয়ায় নেমে গেছে। এভাবে সংবাদ পরিবেশন করলে লাভের আশায় আরও মানুষ এ বাজারে আসবে, তারপর কর্পোরেটরা বেশী দামে ডলার বিক্রি করে দিয়ে সরে পড়বে আর ধরা খাবে সাধারণ লোভী বিনিয়োগকারীরা।
এইরকম সংবাদগুলির হেডলাইনসহ প্রতিবেদনের তথ্য গুলি আরও সমৃদ্ধ হওয়া উচিত, হওয়া উচিত অনুসন্ধানী। শুধু মাত্র - ‘ডলারের দাম খোলা বাজারে ১২০ টাকা’ লিখলেই সংবাদ হয় না। লেখা উচিত কেন এই দাম, কি কারনে এ দাম বাড়ছে, কেউ এতে জড়িত থাকলে তারা কিভাবে জড়িত ইত্যাদি ইত্যাদি। এরকম হেড লাইন দেওয়া উচিত যাতে মানুষ তথ্যও পাবে আবার সতর্কও হবে। যেমন - ‘কৃত্রিম সংকটে খোলা ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়’। সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের রাষ্ট্র ও জনগনের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। একই বিষয় লেখার ধাঁচে পজিটিভ বা নেগেটিভ করা যায়। বিষয়টা হলো তারা কিভাবে সমস্যাটি সমাজকে দেখাতে চায়।
আমি মনে করি, ডলারের সংকট কিছুটা হয়েছিলো। সেটাকে পুঁজি করে একটি চক্র নেমে গেছে ডলার জুয়ায়। এর নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে যুদ্ধ, শ্রীলংকার অর্থনীতি এবং সমসাময়িক ভূরাজনীতি। এর মধ্যে আমাদের পত্রিকা গুলি মূল সমস্যা সামনে না এনে প্রতিদিন শেয়ার দরের তথ্যের মতো ডলারের দাম বাড়ছে- এরকম সংবাদ চলমান রাখায় চক্রটি সাধারণ পাবলিকদের প্রলুব্ধ করতে সক্ষম হয়েছে ডলারের ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা একে একে ঢুকে পড়ছে এই বাজারে। একমসময় মূল চক্র ও প্রতিষ্ঠান গুলি বেশী দামে তাদের হাতে রাখা ডলার বিক্রি করে সড়ে পড়বে আর শেয়ার বাজার ধসের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত পড়বে। এখন দেখার বিষয়, ডলারের দামে হঠাৎ পতন হলে নব্য ডলার জুয়াড়িরা রাস্তায় মিছিল করতে নামে কিনা?
লেখক:
সাখাওয়াত হোসেন মামুন
ভাইস চেয়ারম্যান, ভাইয়া গ্রুপ