স্বজনরা জানান, লিবিয়ায় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করার সময় আকাশের সঙ্গে পরিচয় হয় ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের দালাল তানজিমুলের সঙ্গে। ওই দালালের মাধ্যমে আকাশসহ ৩৮ বাংলাদেশি ইটালির পথে রওয়ান হন। ১৫ দিন আগে লিবিয়ার বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ত্রিপলী নেয়া হচ্ছিল তাদের। পথে মিজদাহ শহরে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে সবাইকে জিম্মি করে মানবপাচারকারী চক্র। জিম্মি অবস্থায় তাদেরকে অত্যাচার, নির্যাতন করার এক পর্যায়ে অভিবাসীদের হাতে এক পাচারকারী মারা যায়। এরই জেরে অভিবাসীদের দিকে বৃহস্পতিবার এলোপাতাড়ি গুলি চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। এতে ঘটনাস্থলেই আকাশসহ ২৬ বাংলাদেশি মারা যান।
আকাশের ভাই বলেন, আমারে ভাই বার বার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছে। ১০ হাজার ডলার চেয়েছে, এত টাকা আমরা কিভাবে দেব? তারা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। আমার ভাই বার বার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েও রক্ষা পেল না।
একই ঘটনায় নিহত ভৈরবের সোহাগ মিয়া, মাহবুব হোসেন, সাকিব মিয়া, মামুন মিয়া, মোহাম্মদ আলী, জানুমিয়াসহ ৭ জনের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম। পরিবারের সুখের জন্য জমি বিক্রি ও ঋণ করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা। দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে সব স্বপ্ন ভেঙে গেলো তাদের পরিবারগুলোর। এখন সন্তানের লাশ দেশে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। পাশাপাশি দাবি জানালের দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।
নিহতদের লাশ দেশে আনাসহ দালালদের শাস্তি নিশ্চিতে সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের গুলিতে নিহত ২৬ বাংলাদেশির বাকিদের মধ্যে আসাদুল-আয়নাল-মনির-সজীব-শাহীন টেকেরহাটের, সুজন-কামরুল গোপালগঞ্জ, রহিম হোসেনপুরের, জুয়েল-মানিক বিদ্যানন্দী, জাকির-জুয়েল-শামীম-সৈয়দুল-ফিরোজ মাদারীপুরের, আরফান ঢাকার, লাল চান্দ নারায়ণপুর, রাকিবুল যশোরের।