বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ব্যাপক মাত্রায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের উপর টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছুড়েছে দাঙ্গা পুলিশ। কয়েকটি শহরে পুলিশের যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে।
এই সংঘর্ষের জন্য আন্দোলনকারীদের দোষারোপ করে তাদের 'লুটেরা এবং বিশৃঙ্খলাকারী' বলে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
গত সোমবার মিনেয়াপোলিসে পুলিশের হেফাজতে থাকার সময় মারা যান ৪৬ বছর বয়সী আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিক ফ্লয়েড।
এই ঘটনায় ৪৪ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং সোমবার তাকে আদালতে তোলার কথা রয়েছে।
অনলাইনে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় যে, বেশ কয়েক মিনিট ধরে ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু গেড়ে বসে রয়েছেন চউভিন। সেসময় ফ্লয়েড বারবারই বলছিলেন যে, তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না।
ওই সময়ে উপস্থিত থাকা আরো তিন পুলিশ কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩০ শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিকাগোতে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। জবাবে পুলিশও পাল্টা টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। শনিবার বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়।
লস এঞ্জেলেসে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়ার পর বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোঁড়ে পুলিশ। ছবিতে দেখা যায় যে, পুলিশের গাড়ির উপর দাড়িয়ে রয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
দ্বিতীয় দিনের মতো ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের বাইরে অবস্থান নিয়েছে অনেক বিক্ষোভকারী। জর্জিয়া, আটলান্টায় শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা ভাংচুর চালানোর পর জান-মালের নিরাপত্তায় সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
মিনেয়াপোলিস, নিউইয়র্ক, মায়ামি, আটলান্টা এবং ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। জর্জিয়া, আটলান্টায় একটি পুলিশ লাইনের কাছে বিক্ষোভের সময় আতশবাজির বিস্ফোরণ ঘটে।
অন্যান্য শহরের সঙ্গে মিনেয়াপোলিস, আটলান্টা, লস এঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া, পোর্টল্যান্ড এবং লুইসভিলে রাতভর কারফিউ জারি করা হয়েছে।
অনেক শহরে বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভেঙ্গে ব্যাপক হারে লুটপাট চালিয়েছে।
শুক্রবার মিনেসোটায় ন্যাশনাল গার্ডের কয়েকশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ন্যাশনাল গার্ড যুক্তরাষ্ট্রের সংরক্ষিত সামরিক বাহিনী যাদেরকে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট কিংবা রাজ্যের গর্ভনর ডাকতে পারে।
এদিকে আন্দোলনকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, 'লুটেরা এবং বিশৃঙ্খলাকারীদের' কর্মকাণ্ড ফ্লয়েডের স্মৃতিকে অসম্মান করবে।
তিনি আরও বলেন, যা প্রয়োজন ছিল তা হচ্ছে, ঘৃণা নয় বরং আরোগ্য লাভ করা, বিশৃঙ্খলা নয় বরং ন্যায়বিচার। আমি ক্ষুব্ধ জনগণের কর্মকাণ্ড সহ্য করবো না- এটা চলবে না।