দফায় দফায় সিদ্ধান্ত বদল করে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিক নেতারা। ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শনিবার (২০ আগস্ট) মধ্যরাতে এক ভিডিও বার্তায় আন্দোলন অব্যহত রাখার ঘোষণা দিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, "বিকেলে শ্রম অধিপ্তরের সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসি। সেখানে আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর শেষে ফিরে আমাদের সঙ্গে বসবেন জানিয়ে আমাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়।"
রোববার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে।
তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি খোকন তাঁতি বলেন, চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে আসছে। আমরা যে মজুরি পাই তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
লস্করপুর চা-ভ্যালির সভাপতি রবিন্দ্র গৌড় বলেন, সুরমা, তেলিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা নিজ নিজ চা বাগানে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা জগদীশপুর পয়েন্টে এসে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
জেলার চুনারুঘাট উপজেলার চান্দপুর চা বাগানের বাসিন্দা চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, একাধিকবার শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চা সংসদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। মালিকপক্ষ ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে চাচ্ছেন। শ্রমিকরা তা মানছেন না।
ধর্মঘটের অষ্টম দিনে শনিবার (২০ আগস্ট) সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছেন।